অনলাইনে লেখালেখি করে আয় করার ৭ উপায়

Staff Reporter

নিজস্ব প্রতিবেদক

শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:১০

অনলাইনে লেখালেখি করে আয় করার ৭ উপায়
ছবি : সংগৃহীত

প্রতিদিন আপনি যে জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছেন, সেটিই একসময় হয়ে উঠতে পারে আপনার আয়-অর্জনের মাধ্যম। অফিসের চেয়ারে বসে কিংবা রাতের নীরবতায় ল্যাপটপ খুলে লেখা  আর এই লেখাই আপনাকে এনে দিতে পারে বাড়তি উপার্জন।

ডিজিটাল যুগে কনটেন্টই রাজা, আর এই কনটেন্টকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা। বিশ্বজুড়ে কোম্পানিগুলো এখন শুধু বিজ্ঞাপন দিয়েই গ্রাহক টানতে চায় না, তারা চায় তথ্যসমৃদ্ধ, নির্ভরযোগ্য এবং প্রভাবশালী লেখা।

এমন লেখাকেই বলা হয় থট লিডারশিপ কনটেন্ট, যা পাঠকের আস্থা তৈরি করে, ব্র্যান্ডকে আলাদা পরিচিতি দেয় এবং প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখে। স্ট্যাটিস্টার ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মার্কেটিং বাজেটের সবচেয়ে বড় খাত এখন ভিডিও কনটেন্ট আর থটৎ লিডারশিপ ভিত্তিক লেখা। এখানেই তৈরি হচ্ছে লেখকদের জন্য বিশাল সুযোগ। আপনি যদি দক্ষভাবে লিখতে পারেন এবং নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে জানেন, তাহলে ঘরে বসেই তৈরি করতে পারবেন আয়ের নতুন দুয়ার। হতে পারেন টেকনিক্যাল রাইটার, ব্লগার।

কীভাবে অনলাইনে লেখালেখি করে গড়ে তুলতে পারেন আয়ের সম্ভাবনা, চলুন জেনে নিই- 

যে কারণে লেখালেখি এত গুরুত্বপূর্ণ 

কনটেন্ট শুধু ওয়েবসাইট বা নিউজলেটারের জন্য নয়, এখন এটি ব্যবসার কৌশলগত অংশ। একটি প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং, বাজারে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি, এমনকি বিক্রি বাড়ানোর মতো সব কাজরই নির্ভর করছে মানসম্পন্ন লেখার ওপর। ফলে চাহিদা বেড়েছে দক্ষ লেখকদের। বিশেষ করে যাঁরা নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে অভিজ্ঞ, তাঁদের জন্য তৈরি হয়েছে আলাদা বাজার।

অনলাইনে লেখালেখি করে আয় করার ৭ উপায়

১. টেকনিক্যাল রাইটার হিসেবে কাজ : যাঁদের প্রযুক্তি, সফটওয়্যার বা ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে, তাঁরা টেকনিক্যাল রাইটার হিসেবে ভালো আয় করতে পারেন। সফটওয়্যার ডকুমেন্টেশন, ইউজার গাইড, টেক ব্লগে এ ধরনের লেখার চাহিদা রয়েছে।

২. বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) ও সফটওয়্যার এজ অ্যা সার্ভিসি (এসএএএস) কোম্পানির জন্য লেখা : প্রোডাক্টিভিটি টুল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কিংবা কাজের সফটওয়্যার নিয়ে লেখা এখন জনপ্রিয়। বড় SaaS কোম্পানিগুলো নিয়মিত লেখক খুঁজছে, যারা তাদের পণ্যকে সহজভাবে গ্রাহকের কাছে তুলে ধরতে পারবে।

৩. অনলাইন কোর্সের কনটেন্ট তৈরি: টেক কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে চান অনেকে। তাঁদের জন্য কোর্স তৈরি করে লেখা, এমনকি ভিডিও কনটেন্টও তৈরি করা যায়। এতে একদিকে কোর্স বিক্রি থেকে আয় হবে, অন্যদিকে লেখক হিসেবে পরিচিতিও বাড়বে।

৪. শিল্পক্ষেত্রের শীর্ষ প্রকাশনায় লেখা : শীর্ষস্থানীয় টেক বা ব্যবসায়িক ম্যাগাজিন, ওয়েবসাইট কিংবা ব্লগে কনট্রিবিউটর হিসেবে লেখা যায়। এতে একদিকে অর্থ পাওয়া যায়, অন্যদিকে নিজের প্রোফাইলও সমৃদ্ধ হয়।

৫. পেইড নিউজলেটার : Substack-এর মতো প্ল্যাটফর্মে পেইড নিউজলেটার চালু করা এখন লেখকদের জনপ্রিয় আয়ের উৎস। টেক শিক্ষার্থী, আগ্রহী প্রকৌশলী কিংবা নির্দিষ্ট পাঠকগোষ্ঠীর জন্য নিয়মিত লেখা পাঠিয়ে সাবস্ক্রিপশন ফি আয় করা সম্ভব।

৬. লিংকডইন নিউজলেটার ও স্পন্সরশিপ : লিংকডইনে নিউজলেটার চালু করে ধীরে ধীরে পাঠকগোষ্ঠী তৈরি করা যায়। একসময় সেটি থেকে স্পন্সরশিপ বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বাড়তি আয়ও সম্ভব। এটি লেখকদের জন্য কার্যত প্যাসিভ ইনকাম হয়ে দাঁড়ায়।

৭. ঘোস্টরাইটিং : অনেক বিশেষজ্ঞ ও থট লিডার নিজের নামে লেখা প্রকাশ করতে চান, কিন্তু সময় পান না। তাদের হয়ে লেখা তৈরি করাই ঘোস্টরাইটিং। হোয়াইট পেপার, গবেষণা প্রতিবেদন, লিংকডইন পোস্টএসবের ভালো চাহিদা রয়েছে।

অভিজ্ঞতা ছাড়াই শুরু করার উপায়

পোর্টফোলিও তৈরি

  • প্রথমেই দরকার একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও। 
  • ব্যক্তিগত ব্লগ শুরু করুন
  • অল্প পারিশ্রমিকে কাজ করে প্রাথমিক অভিজ্ঞতা নিন
  • প্রজেক্ট বানিয়ে অনলাইনে প্রকাশ করুন
  • নির্দিষ্ট বিষয় বেছে নিন

সাধারণ লেখক না হয়ে, নিজের দক্ষতার জায়গা বেছে নিন। যেমন-টেক, স্বাস্থ্য, ফাইন্যান্স বা শিক্ষা। এতে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে এবং লেখার মানও উন্নত হয়।

ক্লায়েন্টকে নিজ সম্পর্কে জানান

পোর্টফোলিও তৈরি হলে ক্লায়েন্ট খোঁজা শুরু করুন। আপওয়ার্ক, লিংকডইন, কিংবা ই-মেইলে নিজ সম্পর্কে প্রচার শুরু করুন। নিজের লেখা, সম্ভাব্য শিরোনাম, এবং কাজের উপায় উল্লেখ করুন।

সূত্র: ফোর্বস