নিরাপত্তায় ক্যামেরার ভয়েস ফিচার কতটা কার্যকর
বর্তমানে ঘরের নিরাপত্তা ক্যামেরায় ‘টু-ওয়ে অডিও’ অনেকটা সাধারণ ফিচার। তবে অনেকেই একবার চেষ্টা করেন, তারপর আর ব্যবহার করেন না। অথচ দরজায় অতিথি এলে দ্রুত নির্দেশনা দিতে এটি দারুণ কাজে আসে। সন্দেহজনক কাউকে দূর থেকে সম্বোধন করা যায়। ভুলভাবে ব্যবহার করলে আবার অতিথি বা পথচারী অস্বস্তি বোধ করতে পারেন। বাড়তি ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।
এ কারণে ফিচারটি কীভাবে কাজ করে, কখন ব্যবহার করা উচিত আর কখন নয়, সেটি জানা জরুরি।
টু-ওয়ে অডিও কীভাবে কাজ করে
টু-ওয়ে অডিও খুব সাধারণ প্রযুক্তি। ক্যামেরায় ছোট স্পিকার আর মাইক্রোফোন থাকে। অ্যাপ থেকে একটি বোতাম চেপে আপনি কথা বলেন। অপর প্রান্তের ব্যক্তি ক্যামেরার মাধ্যমে তা শোনেন। আবার তিনি কথা বললে আপনিও শুনতে পারেন।
কিছু ক্যামেরায় হাফ ডুপ্লেক্স ব্যবস্থায় কথা বলতে হয়। এটি ওয়াকিটকির মতো। এক সময় একজন কথা বলেন, অন্যজন শোনেন। ফুল ডুপ্লেক্স ক্যামেরায় দুজন একই সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এতে কথোপকথন স্বাভাবিক শোনায়। তবে ভালো নেটওয়ার্ক ও শক্তিশালী হার্ডওয়্যার প্রয়োজন।
অডিওর মান নির্ভর করে আবহাওয়া, দেয়ালের প্রতিধ্বনি, ক্যামেরার স্পিকারের মান এবং আপনার ওয়াইফাই সিগনালের ওপর। সামান্য দেরি হলেও কথার ছন্দ নষ্ট হয়।
টু-ওয়ে অডিও মানে ক্যামেরা শুধু ভিডিও ধরে না, আশপাশের শব্দও শোনে। আপনি কথা বললে সেটিও বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। তাই গোপনীয়তার বিষয়টি গুরুত্ব পাওয়াই স্বাভাবিক।
টু-ওয়ে অডিও কখন সবচেয়ে উপকারী
লাইভ ভিডিওতে কিছু সন্দেহজনক দেখলে এটি সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে। দরজার সামনে কেউ ঘোরাঘুরি করলে শান্তভাবে জিজ্ঞাসা করতে পারেন সাহায্য লাগবে কিনা। এতে পরিস্থিতি বোঝা যায়। অযথা ভয় দেখালে উত্তেজনা বাড়তে পারে।
ডেলিভারি ম্যান ও ড্রাইভারের ক্ষেত্রেও সুবিধা মেলে। প্যাকেজ কোথায় রাখতে হবে তা দ্রুত বলে দিতে পারেন। শিশুর ঘুমের সময়ে দরজার বেল না বাজাতে অনুরোধ করা যায়। তবে অতিরিক্ত নির্দেশনা দেয়া ঠিক নয়। এতে তারা বিরক্ত হতে পারেন।

ঘরের ভেতরে এটি ইন্টারকমের মতো কাজ দেয়। স্কুল থেকে ফেরত শিশু ঠিক আছে কিনা দেখে নিতে পারেন। বয়োজ্যেষ্ঠ কাউকে বার্তা দেয়া যায়। তবে কথায় যেন নজরদারির অনুভূতি না থাকে।
পোষা প্রাণির ক্ষেত্রেও এই ফিচার কাজে লাগে। তবে সব প্রাণি একইভাবে প্রতিক্রিয়া দেয় না। তাই খুব সংক্ষিপ্ত ও পরিচিত নির্দেশনাই ভালো।
কখন টু-ওয়ে অডিও ব্যবহার করা উচিত নয়
মোশন অ্যালার্ট পেলেই সঙ্গে সঙ্গে কথা বলা ঠিক নয়। পথচারী বা ডেলিভারি কর্মী ভুলভাবে ভড়কে যেতে পারেন।
প্রতিবেশীর কথোপকথন শুনতে চেষ্টা করা বা অপ্রয়োজনে কাউকে সম্বোধন করা আইনগত ঝুঁকি তৈরি করে। যুক্তরাষ্ট্রে অডিও রেকর্ডিংয়ের আইন অঙ্গরাজ্যভেদে ভিন্ন। তাই আগেই অতিথি বা ভাড়াটিয়াদের জানানো ভালো যে ক্যামেরা সক্রিয় আছে।
কেউ যদি ভাঙচুরের চেষ্টা করে, ক্যামেরা দিয়ে চিৎকার করলে তেমন লাভ হয় না। বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তখন সাইরেন বা মনিটরিং সার্ভিসকে সতর্ক করাই বেশি কার্যকর।
টু-ওয়ে অডিওকে স্বাভাবিক রাখার পাঁচ উপায়
- বার্তা সংক্ষিপ্ত রাখুন। দীর্ঘ কথা অস্বস্তিকর শোনায়।
- নিজেকে পরিচয় দিন। এতে বিভ্রান্তি কমে।
- দরজার বেল বাজলে কথা বলার আগে এক মুহূর্ত অপেক্ষা করুন।
- প্রয়োজনে ক্যামেরার প্রি-সেট বার্তাগুলো ব্যবহার করুন। এগুলো স্বাভাবিক শোনায়।
- ব্যক্তিগত তথ্য এড়িয়ে চলুন। অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখুন এবং অপ্রয়োজনে অন্যকে অ্যাক্সেস দেবেন না।
ফিচারটি আপনার জন্য কীভাবে কাজ করবে
টু-ওয়ে অডিওকে নজরদারির মাধ্যম নয়, যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করুন। এতে প্রযুক্তি আরও মানবিক হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর ঘরও থাকে আরও নিরাপদ।
সূত্র : পিসি ওয়ার্ল্ড