ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক নিরাপদ রাখার কার্যকর ৬ পদ্ধতি
অনলাইনে গোপনীয়তা রক্ষা এখন আর স্বাভাবিক কোনো সুবিধা নয়, বরং সচেতন প্রচেষ্টার বিষয়। ঘরের ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে আপনি যে কম্পিউটার, ফোন, টিভি বা স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করেন, সেগুলোর তথ্য যদি নিরাপদ না থাকে, তাহলে ব্যক্তিগত তথ্য ট্র্যাক হতে পারে। কিছু বিনামূল্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করলেই ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব। এই লেখায় রয়েছে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ককে আরও সুরক্ষিত রাখার ৬টি সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত। চলুন, জেনে নিই-
১) ব্রাউজারকে নিরাপদ সেটআপে ব্যবহার করুন
গোপনীয়তা সুরক্ষার শুরুই হয় ব্রাউজার থেকে। চাইলে ব্রেভ, ‘ডাকডাকগো’ বা ‘টর’ এর মতো প্রাইভেসি-ফোকাসড ব্রাউজার ব্যবহার করতে পারেন। অন্য ব্রাউজার যেমন ফায়ারফক্স বা ক্রোম ব্যবহার করলেও ট্র্যাকিং প্রটেকশন, প্রাইভেট ব্রাউজিং অপশন, কুকি নিয়ন্ত্রণ এবং এক্সটেনশন ব্যবস্থায় কড়াকড়ি করলে বাড়তি সুরক্ষা পাবেন। ‘ইউব্লক অরিজিন’ বা ‘নো-স্ক্রিপ্ট’ এর মতো এক্সটেনশনও বিজ্ঞাপন ও ট্র্যাকার ব্লক করতে সাহায্য করে।
২) নিরাপদ অ্যাপ ও পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন
অ্যাপ ব্যবহারেও গোপনীয়তার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। মেসেজিংয়ে সিগন্যাল বা টেলিগ্রাম এর মতো এনক্রিপ্টেড প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা যেতে পারে। ই-মেইলে প্রোটনমেইল বা থান্ডারবার্ড এর এনক্রিপশন সাপোর্টও উপকারী। পাশাপাশি সব অ্যাকাউন্টে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এবং বিটওয়ার্ডেন এর মতো পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের সাহায্য নিলে নিরাপত্তা আরও মজবুত হয়।
৩) প্রাইভেট ডিএনএস সক্রিয় করুন
ডিভাইস বা রাউটারে ডিএনএস ওভার এইচটিটিপিএস চালু করলে ব্রাউজিং ডেটা এনক্রিপ্টেড থাকে। ক্লাউডফ্লেয়ার ডিএনএস বা গুগল ডিএনএস ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক স্তরে গোপনীয়তা বাড়ানো যায়। অনেক ইন্টারনেট রাউটারে এই সেটিংস সমর্থিত থাকে, ফলে পুরো নেটওয়ার্কই নিরাপদ হয়।
৪) নেটওয়ার্ককে বিজ্ঞাপন ও ট্র্যাকার ব্লক করুন
পাই-হোল বা অ্যাডগার্ড হোম-এর মতো টুল নেটওয়ার্ক স্তরে বিজ্ঞাপন ও ট্র্যাকিং রিকোয়েস্ট বন্ধ করে। এমন সিস্টেম স্থাপন করলে শুধু ব্রাউজার নয়, স্মার্ট টিভি বা অন্যান্য ডিভাইসও নিরাপদ থাকে। তবে কিছু ওয়েবসাইট ঠিকমতো কাজ না করার সমস্যা দেখা দিতে পারে, সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সাইটে ব্যতিক্রম উপায় যুক্ত করা যায়।
৫) নিরাপদ সার্চ টুল ব্যবহার করুন
গুগল সার্চ ব্যবহার করলে তথ্য ট্র্যাকিংয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকে। পরিবর্তে ‘ডাকডাকগো’ বা ‘স্টার্টপেজ’ এর মতো প্রাইভেসি ফোকাসড সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করা যেতে পারে। চাইলে নিজস্ব ল্যান সার্ভারে ইয়াসি’র মতো ওপেন সোর্স সার্চ সিস্টেমও স্থাপন করতে পারবেন।
৬) ফায়ারওয়াল ব্যবহার করুন
শুধু ডিভাইসে থাকা ফায়ারওয়াল যথেষ্ট নয়। পিএফ-সেন্স, ওপিএনসেন্স বা আইপিএফায়ার এর মতো ডেডিকেটেড নেটওয়ার্ক ফায়ারওয়াল পুরো ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ককে আরও সুরক্ষিত করে। এটি নেটওয়ার্কে অননুমোদিত প্রবেশ প্রতিহত করতে সহায়তা করে।
গোপনীয়তা রক্ষা এখন শুধু একটি ডিভাইস নয়, পুরো নেটওয়ার্ককে নিরাপদ করার বিষয়। সচেতন ব্যবহারে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক অনেক বেশি সুরক্ষিত হয়ে ওঠে এবং ব্যক্তিগত ডিজিটাল জীবন থাকে আরও গোপন ও নিশ্চিন্ত।
সূত্র : জিডি নেট ডটকম