নৈতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিকাশে কাজ করবে ‘এআই কালেকটিভ বাংলাদেশ’

Staff Reporter

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৬

নৈতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিকাশে কাজ করবে ‘এআই কালেকটিভ বাংলাদেশ’

দেশে নৈতিক ও দায়িত্বশীল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিকাশে কাজ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে ‘এআই কালেকটিভ বাংলাদেশ’ চ্যাপ্টার। সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সম্প্রতি গুলশান ২-এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা অংশ নেন। তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নৈতিক ব্যবহার ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে এআই কালেকটিভ বাংলাদেশের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আসিফ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পৃথিবীকে আরও বাসযোগ্য করে তুলতে পারে। তবে তা সম্ভব তখনই, যখন আমরা নৈতিক মূল্যবোধ ও জ্ঞানের ভাগাভাগিকে অগ্রাধিকার দিই। আমাদের লক্ষ্য আস্থা, স্বচ্ছতা ও মানবকল্যাণের ভিত্তিতে অগ্রসর হওয়া।’

অনুষ্ঠানে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নওশাদ জাহান প্রমী পরিচালনা করেন একটি প্যানেল আলোচনা। এতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম আহমেদ এবং মালয়েশিয়ার লুসলি কাপল্ড টেকনোলজিস-এর প্রধান নির্বাহী ও প্রধান সমাধান স্থপতি ফিরোজ এম জাহিদুর রহমান।

আলোচনায় বক্তারা শিক্ষাক্ষেত্র, উন্নয়ন খাত ও কর্মবাজারে এআই-এর প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ গবেষণার সম্ভাবনা নিয়ে মত দেন।

ড. শামীম আহমেদ বলেন, ‘দেশে একটি এআই ইথিক্যাল কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলা জরুরি।’ তিনি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সরকার ও শিল্পখাতের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন এবং একটি জাতীয় রোবট নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান।

অন্যদিকে ফিরোজ এম জাহিদুর রহমান বলেন, ‘এআই নিয়ে কথা বলার সময় ‘নৈতিক’ ও ‘অবৈধ’ বিষয়গুলোর পার্থক্য পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে, নইলে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে।’

প্যানেল আলোচনার পর অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত মতবিনিময়ে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, ব্যাংকার, প্রশিক্ষক ও মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। তারা এআই কীভাবে মানুষের জীবন ও সমাজে প্রভাব ফেলতে পারে, সে বিষয়ে মত প্রকাশ করেন।

বুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রধান ড. তানজিমা হাশেম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চ্যাটজিপিটি বা অনুরূপ এআই টুল ব্যবহার থেকে বিরত রাখা তাদের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বরং এসব টুল কীভাবে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন।’

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস-এর লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রধান ড. হাসান মাহমুদ বলেন, ‘এআইকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সহযোগী হিসেবে ভাবা উচিত, যা আমাদের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করবে।’

রূপালী ব্যাংকের এজিএম ও সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষক জি. এম. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় এআই নীতিমালা দ্রুত চূড়ান্ত করা জরুরি, যেখানে সব শিল্পখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।’

অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে এআই কালেকটিভ বাংলাদেশের চ্যাপ্টার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সামি আল ইসলাম-এর ধন্যবাদ বক্তব্যের মাধ্যমে। তিনি নৈতিক এআই বিকাশে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ভবিষ্যতে নানা কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানান।