বিশৃঙ্খলায় ভরপুর গ্রোকিপিডিয়া

Staff Reporter

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:০৪

বিশৃঙ্খলায় ভরপুর গ্রোকিপিডিয়া
ছবি : দ্য ভার্জ

ইন্টারনেটে নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্যভান্ডারের কথা উঠলেই প্রথমে আসে উইকিপিডিয়ার নাম। এর বিরুদ্ধেই তৈরি হয়েছিল গ্রোকিপিডিয়া। এটি সত্যের ভিত্তিতে একটি বিকল্প তথ্যভান্ডার হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এখন প্ল্যাটফর্মটি নিজের ভেতরের বিভাজন, রাজনৈতিক দখলদারিত্ব এবং অগোছালো ব্যবস্থাপনার কারণে বিশৃঙ্খলায় ভরপুর।

প্রথম দিকে গ্রোকিপিডিয়ার প্রায় আট লাখ নিবন্ধ ছিল পুরোপুরি এআই চ্যাটবট গ্রোকের লেখা। ব্যবহারকারীরা তখন তা সম্পাদনা করতে পারতেন না। অক্টোবরের দিকে ভার্সন ০.২ চালু হলে সবাই সম্পাদনা প্রস্তাব দিতে পারল। ধারণা করা হয়েছিল এতে তথ্য আরও সমৃদ্ধ হবে। কিন্তু নতুন ব্যবস্থায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গেছে।

গ্রোকিপিডিয়ায় সম্পাদনা প্রস্তাব দেওয়া খুবই সহজ। লেখা হাইলাইট করে সাজেস্ট এডিটে ক্লিক করলেই হয়। কিন্তু সমস্যা হলো, এই প্রস্তাব যাচাই করছে গ্রোক নামের এআই চ্যাটবট নিজেই। কোন পরিবর্তন অনুমোদিত হচ্ছে বা বাদ পড়ছে তা দেখা যায় না। প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২২ হাজারের বেশি সম্পাদনা অনুমোদিত হয়েছে। তবে কোন নিবন্ধে কী পরিবর্তন হলো বা কে প্রস্তাব দিল তা বোঝার উপায় নেই।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন এই অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার কারণে গ্রোকিপিডিয়ায় ভুল তথ্য, একপেশে মতামত এবং পক্ষপাতমূলক ভাষা ঢুকে পড়েছে। অনেকে মনে করছেন এটি এখন আর নিরপেক্ষ তথ্যভান্ডার নয়। নতুন সম্পাদনা ব্যবস্থাই তথ্যের গুণগত মানকে আরও খারাপ করছে।

সমালোচকেরা অভিযোগ করছেন গ্রোকিপিডিয়া মূলধারার তথ্যভান্ডারকে চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে নিজেই বিভ্রান্তি ও ভুল তথ্যের উৎসে পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন এটি এখন মানুষের সম্পাদনার প্ল্যাটফর্ম নয়। এটি হয়ে গেছে গ্রোক নামের এআই চ্যাটবটের উপর নির্ভরশীল একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প।

তবুও প্রতিষ্ঠাতারা দাবি করছেন- তারা প্ল্যাটফর্মটিকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। তাদের আশা সব মতের জন্য সমান সুযোগ থাকলে এটি বিকল্প তথ্যভান্ডার হিসেবে টিকে থাকতে পারবে। কিন্তু বর্তমানে ভেতরের বিভাজন এত তীব্র যে, অনেকেই ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান।

ডিজিটাল যুগে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যভান্ডার তৈরি করা সত্যিই কঠিন। গ্রোকিপিডিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি দেখাচ্ছে কেবল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরপেক্ষতা আনা সম্ভব নয়। এখানেই প্ল্যাটফর্মটির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

সূত্র : দ্য ভার্জ