ওপেনএআই’র সোরা : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভিডিও বিপ্লব

Staff Reporter

নিজস্ব প্রতিবেদক

রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৪

ওপেনএআই’র সোরা : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভিডিও বিপ্লব
ছবি : আল-জাজিরা

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা ক্রমেই ভিডিওতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। এই প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওপেনএআই এনেছে নতুন ভিডিও অ্যাপ সোরা, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ব্যবহারকারীর স্বপ্নের মতো ভিডিও তৈরি করতে সাহায্য করে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদকরা কয়েক ঘন্টা সোরা ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হওয়া ভিডিও দেখেছেন। এক ভিডিওতে তাঁরা স্কাইডাইভিং করছেন, পিজ্জাকে প্যারাশুট হিসেবে ব্যবহার করছেন। আরেকটিতে একজন প্রতিবেদক রোবটের ভিড়ের মধ্যে হোম রান করছেন। অন্য ভিডিওতে ‌‘ম্যাট্রিক্স’ স্টাইল লড়াই করছেন রোনাল্ড ম্যাকডোনাল্ডের সঙ্গে, যেখানে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে চিজবারগার।

সোরা শুধু একটি ভিডিও তৈরি করার অ্যাপ নয়। এটি টিকটকের মতো ব্যবহারকারীর ইন্টারফেস, ভিডিও সাজেশন এলগরিদম এবং বন্ধুদের ফলো করার সুবিধা দিয়ে কার্যত একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। ব্যবহারকারী চাইলে নিজের বা অন্য কারো ছবি আপলোড করে ভিডিওতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন, যা সোরা-তে ‘ক্যামিওস’ নামে পরিচিত।

তবে এই প্রযুক্তি কিছু ঝুঁকি নিয়ে এসেছে। প্রথমদিন থেকেই ব্যবহারকারীরা সোরা ব্যবহার করে পপ সংস্কৃতির কপিরাইটেড ভিডিও তৈরি করছেন। কিছু ভিডিও এতটাই বাস্তবমুখী যে বন্ধুদের মধ্যেও বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এছাড়া জনপ্রিয় ব্যক্তির বা মৃত ব্যক্তির চেহারা ব্যবহার করে মিথ্যা ভিডিও তৈরি করা সহজ, যা তথ্যবহুল বিভ্রান্তি বা কু-প্রচারের কারণ হতে পারে।

সোরা ব্যবহার করে কিছু ধরনের কপিরাইট এবং যৌনসঙ্গত কন্টেন্ট তৈরি করা সীমাবদ্ধ। যেমন ‘সাউথ পার্ক’-এর চরিত্র ব্যবহার করা যায়, কিন্তু ব্যাটম্যান বা সুপারম্যান ব্যবহার নিষিদ্ধ। এছাড়া পাবলিক ফিগাররা চাইলে তাদের চেহারা সোরা-তে ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন বা তা ব্লক করতে পারেন।

ওপেনএআই-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যারা নিজেদের কাজ বা চেহারা সোরা-তে ব্যবহার করতে চান না, তাদের জন্য ব্লক বা টেকডাউন ব্যবস্থা থাকবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সোরা ও ক্যামিওস ফিচার নতুন ধরনের তথ্যবহুল বিভ্রান্তি ও প্রতারণার সুযোগ তৈরি করতে পারে।

তবুও সোরা-এর জনপ্রিয়তা অবিলম্বে প্রতীয়মান হয়েছে। সহজ আইডিয়ার কয়েক মিনিটের প্রক্রিয়াকরণ ও শক্তিশালী কম্পিউটিং পাওয়ার ব্যবহার করে, ব্যবহারকারীরা তাদের স্বপ্নের মতো ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সোরা-এর মতো অ্যাপস ভবিষ্যতের সোশ্যাল মিডিয়ার রূপ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ওপেনএআই-এর লক্ষ্য হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করে তোলা, যা ব্যবহারকারীদের নিজস্ব কন্টেন্ট তৈরি ও শেয়ার করার সুযোগ দেবে।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস