মঙ্গলবার

ঢাকা, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

সর্বশেষ


খবর

শুধু অক্টোবর নয়, বছরজুড়ে সাইবার আপরাধ সচেতনতা কর্মসূচি পালন করা সময়ের দাবি

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, দুপুর ১:০৭

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

প্রথম সপ্তাহে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা, দ্বিতীয় সপ্তাহে অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণা প্রতিরোধ, তৃতীয় সপ্তাহে সাইবার বুলিং ও সাইবার ড্রিল এবং চতুর্থ সপ্তাহে অনলাইনে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে ওয়েবিনার, সেমিনার ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।

দেশের সাধারণ মানুষের সাইবার জগতের অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাসজুড়ে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে সাইবার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ)।

‘সচেতন রই, #সাইবার স্মার্ট হই’ প্রতিপাদ্যে অক্টোবর মাসজুড়ে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি পালনের মধ্যদিয়ে ৯মবারের মতো ক্যাম পালন করতে যাচ্ছে সংগঠনটি।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাইবার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সিক্যাফ সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরুন আশরাফীর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে  মাসব্যাপী কর্মসূচি তুলে ধরেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুল্লাহ নাঈম।

আব্দুল্লাহ নাঈম বলেন, অনলাইন-অফলাইন হাইব্রিড মডেলে সাইবার জগতের অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা বিষয়ক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সপ্তাহে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা, দ্বিতীয় সপ্তাহে অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণা প্রতিরোধ, তৃতীয় সপ্তাহে সাইবার বুলিং ও সাইবার ড্রিল এবং চতুর্থ সপ্তাহে অনলাইনে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে ওয়েবিনার, সেমিনার ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।

তিনি জানান, সারা দেশের সাধারণ মানুষের  সাইবার জগতে নিজের অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করতেই সাজানো হয়েছে এসব কর্মসূচি।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাইবার প্যারাডাইজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ হাসান, এফ ফাইভ ডিজিটাল টেরিটরি অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার মো. আহসান হাবিব, শোফস কান্ট্রি ম্যানেজার আবুল হাসনাত মহসীন, সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন উপদেষ্টা প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন, সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান এবং মোবাইল অপারেটর রবি'র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী।

সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন উপদেষ্টা প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের সমাজে, দেশে অপরাধ আগেও হতো, এখনও হয়। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অপরাধ করার ইক্যুইপমেন্টের ধরণটা পরবির্তন হয়েছে। যেমন, আগেও আমরা ব্যাংকে যেকোন বিল দিয়েছি। এখন ঘরে বসে মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে দিয়ে দিচ্ছি। আগে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় পথে টাকা ছিনতাই হতো। এখন ব্যাংকের সার্ভার হ্যাক করে হ্যাকাররা। লুট করে কোটি কোটি টাকা। সময়ের সাথে অপরাধের ধরণ পরবির্তন হয়েছে।

তিনি বেলন, আন্তর্জাতিকভাবে অক্টোবরকে সাইবার নিরাপত্তা মাস হিসেবে পালিত হলেও নিজেদের সুরক্ষায় বছরজুড়েই সাইবার আপরাধ সচেতনতায় এই কর্মসূচি পালন করা সময়ের দাবি। অপরাধের ধরন, মাধ্যম ও প্রকৃতি বদল হওয়ায় এই সচেতনতা কখনোই থামানো যাবে না। সবাইকে নিজ উদ্যোগেই এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে।

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান বলেন,  সাইবার অপরাধ বিষয়ে একা সচেতন হলে চলবে না। যেসব মাধ্যমে সাইবার অপরাধ সম্পন্ন হয়, যেমন, ই-কমার্স প্লাটফর্ম, সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট এগুলো যারা তৈরি করেন, যারা ব্যবহার করেন, যারা ম্যানেজমেন্টের কাজ করেন, সবাইকেই সাইবার অপরাধ বিষয়ে জানতে হবে। এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। প্রথমে নিজেরা জেনে আশপাশের ঘর থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদলতে সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে। এ দায়িত্বটা আমাদের সবাইকেই নিতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতি বছর অক্টোবরকে আন্তর্জাতিকভাবে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস হিসেবে পালন হয়ে থাকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হয়ে থাকে। এই ক্যাম্পেইন হলো সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও ইন্ডাস্ট্রিগুলোর মধ্যে একটি সম্মিলিত প্রয়াস। সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস উদযাপনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে এটা নিশ্চিত করা হয় যে, ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকতে ও অধিক নিরাপদ অনলাইনের জন্য যেসব পূঁজি থাকা আবশ্যক আমাদের তার সবই রয়েছে।

এতে আরও জানানো হয়, ২০০৪ সাল থেকে আমেরিকা, ২০১১ থেকে নরওয়ে এবং ২০১২ থেকে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ অক্টোবরকে ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালন করে আসছে। সাইবার দস্যুতা থেকে নাগরিকদের নিরাপদে থাকতে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি নেওয়া হয় এ মাসে। বাংলাদেশে ২০১৬ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি বেসরকারি উদ্যোগে পালন শুরু হয়। ওই বছরের ১ অক্টোবর ঢাকার সেগুন বাগিচায় সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিসিএ ফাউন্ডেশন) আয়োজিত ‘Cybersecurity: Context of Bangladesh’ শীর্ষক সেমিনার ছিল এই আয়োজনের প্রথম অনুষ্ঠান। এর পর থেকে প্রতি অক্টোবরে ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে মাসব্যাপী নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে সংগঠনটি।

নিরাপদ ইন্টারনেটের এসব কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে পার্টনার হিসেবে থাকছে সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা। জাতীয় কমিটির নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসব বাস্তবায়ন হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা কার্যক্রম বিশ্বের বাংলাভাষীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করবে। পৌঁছে যাবে দেশের সব ভোক্তা, ছোট ও মাঝারি আকৃতির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, করপোরেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও তরুণ সমাজসহ তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিটি মানুষের কাছে।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৫৯ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর