সোমবার

ঢাকা, ১৯ মে ২০২৫

সর্বশেষ


ই-কমার্স

শিগগিরই ইভ্যালি’র গ্রাহকদের দেনা পরিশোধ করতে চান রাসেল

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, দুপুর ২:৩১

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী ই-ভ্যালির কাছে গ্রাহকের সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা পাওনা আছে। আর এসক্রো পদ্ধতিতে বিকাশ-এর গেটওয়েতে যে টাকা আছে তা তিনি শিগগিরই ছাড় করাতে পরবেন। তবে নগদ-এর হিসাবে কিছুটা সময় লাগবে।

অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই গ্রাহকদের সব দেনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল। তিনি বলেছেন, ‘আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে আমরা দেনা পরিশোধ করা শুরু করব। সেই অ্যামাউন্ট কত হবে তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় ‌‘লাইভ উইথ সিইও’ শিরোনামে ইভ্যালির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে করা লাইভে এসে এই ঘোষণা দেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনের পর সবার প্রশ্নের জবাব দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিভিন্ন প্রশ্নের জাবাবে তিনি জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী ই-ভ্যালির কাছে গ্রাহকের সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা পাওনা আছে। আর এসক্রো পদ্ধতিতে বিকাশ-এর গেটওয়েতে যে টাকা আছে তা তিনি শিগগিরই ছাড় করাতে পরবেন। তবে নগদ-এর হিসাবে কিছুটা সময় লাগবে।

লাইভের শুরুতেই গ্রাহকের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান মোহাম্মাদ রাসেল। তিনি বলেন, ‘বিগত দিনগুলোতে হয়ত আপনারা খারাপ ছিলেন। কারণ ইভ্যালিতে অর্ডার করা পণ্য আপনারা পাচ্ছিলেন না। এজন্য আপনাদের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এতদিন আমি কারাগারে ছিলাম।’

জেল জীবনকে বিভিষিকাময় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘যেসব গ্রাহক ও ব্যবসায়ী ইভ্যালির কাছে টাকা পান, আমি আপনাদের কষ্টটা ফিল (অনুভব) করি। আমি মনে করি, ইভ্যালিকে যদি বিজনেস করতে দেওয়া হয়, তাহলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই আপনাদের সব দেনা পরিশোধ করবো। এটা আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলছি।’

দেনা পরিশোধ কীভাবে করবেন সেই প্রশ্ন উঠলে তিনি বলেন, ‘কীভাবে সম্ভব হবে তার সব উত্তর আমি দেবো। জাতীয় নির্বাচনের পর একটি সংবাদ সম্মেলন করে গ্রাহক, ব্যবসায়ী ও মিডিয়ার সব প্রশ্নের উত্তর দেবো।’

এর আগে ‘বিগ ব্যাং’ শিরোনামে পোস্টারের ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থাকা গ্রাহকদের দীর্ঘ সময়ের এই দূরত্ব ইভ্যালির ‘বিগ ব্যাং’ অফারের মাধ্যমে ঘোচাবেন তিনি। সেখানে ২৯ ডিসেম্বর ইতিহাস গড়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

লাইভে এসে এই পোস্টটিকে দেনা থাকার যন্ত্রণা মুক্তির উপায় বলে মন্তব্য করেন রাসেল। তবে ব্যক্তিগত স্বার্থে কোনো দেনায় পড়েননি বলে মনে করেন তিনি। ডায়াপার আমদানি করে ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেওয়ার সেলিং পেইন রোধ করতেই ইভ্যালির জন্ম বলে জানান তিনি।

লাইভে অফার বিষয়ে শুরুতে খুব বেশি কথা না বলে লাইভে রাসেল বলেন, ‘অজস্র মানুষ ইভ্যালিকে ভালোবাসে বলেই আজ ইভ্যালি ফিরে আসতে পেরেছে। গুটিকয়েক মানুষ যারা ইভ্যালির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারাই ইভ্যালির বিরুদ্ধে নিজে বা অন্য কাউকে দিয়ে অপপ্রচার করায়। ইভ্যালিকে ব্যবসার সুযোগ দেওয়া হলে রাসেল বা ইভ্যালি যতটা উপকৃত হবে, তার চেয়ে বেশি লাভবান হবে এ দেশের জনগণ। যারা ইভ্যালিতে কেনাকাটা করে পণ্য পাননি এবং যারা ইভ্যালিতে পণ্য দিয়ে পেমেন্ট পাননি, তারাও উপকৃত হবে।’

ইভ্যালি প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, কারিগরি সীমবাদ্ধতার কারণে বিগ ব্যাং ক্যাম্পেইন লাইভ হবে জানিয়ে রাসেল বলেন, ‘অফার দিলেই মুহূর্তেই ৫-৬ লাখ হিট পড়ে। লোভ নয় প্রয়োজনে বেস্ট দামেই এখান থেকে মানুষ কিনতে আসেন। তবে এই বিগ ব্যাংকে ইভ্যালি একটি পণ্যও লস করে বিক্রি করছে না। এটাই আমাদের সিগন্যাল।’

স্কেলেবল অর্গানাইজেশন হিসেবে ই-ভ্যালিতে নতুন বিনিয়োগের প্রত্যাশা তুল ধরে রাসেল মনে করেন, ‘দেশের ৫ শতাংশ লোকও যদি ইভ্যালি থেকে তাদের পণ্য নেয় তাহলে এই দেনা পরিশোধ করা খুবই সহজ হবে।’

ভারতের সঙ্গে টেকনলোজি ও বিজনেস অ্যাক্টিভিটিস-এ ইভ্যালির তুলনা করে তিনি বলেন, ‘এটা যদি স্মার্ট হয় তাহলে ভারতের তুলনায় ৩০ ভাগের এক ভাগ ইনভেস্ট পেলেও ১ দিনে আপনাদের সকল দেনা পরিশোধ সম্ভব। জাস্ট আমার ৩ ঘণ্টা সময় লাগবে।’

আমার কাছের টাকা কোথায় গেল প্রশ্নের জবাবে ই-ভ্যালি প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমার কাছে যদি টাকা থাকতো তাহলে ৫দিনের রিমান্ডে তা বেরিয়ে আসতো। তাহলে টাকাটা আমি কী করেছি? হয়তো টেকনিক্যালি অথবা বিজনেস প্রসেস এ ভুল করেছি। সেজন্য ক্ষমা চাই। তবে একটা জিনিস শিওর থাকেন, যে লোকটা ৫ লাখ টাকার বাইক ৩ লাখ টাকায় পেয়েছিলো (যদিও বাইক বিক্রি ২০ শতাংশ) সেই ২ লাখ টাকা তো কোম্পানির লস ছিলো। সেই ঘাটতি অ্যাকিউমিলেটেড হয়ে এই রিফান্ডটা দিতে পারিনি।’

‘২৭ মাস কারাভোগ করেছি। আমি পানিসড। কিন্তু আমাকে একটা সুযোগ দিন। আমি পুর্জি স্কিম করিনি। করলে মার্চেন্ট দরকার হতো না। হাওয়ার ওপর ব্যবসা করতাম। মূলত প্রতিদ্বন্দ্বীরা কিংবা দেশের অরজকতা পছন্দকারীরা এমন নাম দিয়েছে। কিন্তু আমরা খুব শর্টলি আমাদের গোল দিয়েই সফলতা সম্ভব’- যোগ করেন রাসেল।

এই আস্থার যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি কথা বলতে বলতে যে অর্ডার এসেছে তার প্রফিট দিয়ে ইনশাআল্লাহ এ মাসের খরচ উঠে যাবে।’

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৩৯৮ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর