ছবি: সংগৃহীত
এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৩০০ জন ইথিক্যাল হ্যাকার হতে অনলাইন বাছাইপর্বের মাধ্যমে বাছাইকৃত ৬০ জন অন-সাইট ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত করেন এবং উদ্ভাবনী সমাধান প্রদর্শন করেন। এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতার প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করা হয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত আইসিটি টাওয়ারে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো দেশের অন্যতম বৃহৎ সাইবার নিরাপত্তা প্রতিযোগিতা এবং কনফারেন্স “হ্যাকারওয়ান বাগ হান্ট ২০২৪”। এই আয়োজন দেশের সাইবার নিরাপত্তা খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সচেতনতা তৈরির একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
দিনব্যাপী এই আয়োজন শুরু হয় সকাল ৯টায়। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৩০০ জন ইথিক্যাল হ্যাকার হতে অনলাইন বাছাইপর্বের মাধ্যমে বাছাইকৃত ৬০ জন অন-সাইট ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত করেন এবং উদ্ভাবনী সমাধান প্রদর্শন করেন। এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতার প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করা হয়।
প্রতিযোগিতায় মোট দেড় লাখ টাকার প্রাইজমানি বরাদ্দ ছিল। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের ভিত্তিতে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন শেখ আলি আকবর, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন মোহাম্মদ করিমুল ইসলাম সেজান এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন মোহাম্মদ হৃদয়। এই উদ্যোগ প্রতিযোগীদের দক্ষতা প্রদর্শন এবং সাইবার নিরাপত্তার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর একটি মঞ্চ হিসেবে কাজ করেছে।
প্রতিযোগিতার শেষ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয় একটি বিশেষ কনফারেন্স সেশন যেখানে প্রায় ৩০০ জন সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনাল এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সেখানে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন। স্পিকার হিসেবে ছিলেন এ. এস. এম. শামীম রেজা (ফাউন্ডার-দি টিম ফিনিক্স), কায়সার ইউসুফ রেগান (সিনিয়র টেকনিক্যাল প্রজেক্ট ম্যানেজার-বিটেলস সাইবার সিকিউরিটি), মুজতাহিদুল ইসলাম তানিম (টিম লিড, সিকিউরিটি কনসাল্টেন্ট-সিকিউর লেয়ার সেভেন), মেহেদী হাসান রিমন (সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার-রেডসেন্ট্রি), ইমরান হুদা (সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার-ফ্যাক্টরিয়াল এইচআর), মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম (এপ্লিকেশন সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার-ডিসক্লোজিফাই লিমিটেড) এবং মোহাম্মদ গোলাম রাব্বি (ইনডিপেন্ডেন্ট সিকিউরিটি রিসার্চার-ইয়োগোশা স্ট্রাইক ফোর্স)। তারা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের সুরক্ষা, ম্যালওয়্যার প্রতিরোধ এবং বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তা উন্নয়নের কৌশল নিয়ে মতবিনিময় করেন।
সম্মেলনের সময় অনুষ্ঠানের পাওয়ার স্পন্সর বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (বিসিএসআই) তাদের জাতীয় ভালনারেবিলিটি ডিসক্লোজার প্রোগ্রাম (এনভিডিপি) ঘোষণা করেছে, যা আমাদের দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোর নিরাপত্তা জোরদার করতে সরকার ও সাইবার নিরাপত্তা গবেষণা কমিউনিটির মধ্যে একটি যৌথ উদ্যোগ। তারা তাদের সম্প্রতি চালু করা ক্রাউডসোর্সড ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সিএস-সার্ট) পরিচয় করিয়ে দিয়েছে, যা একটি কমিউনিটি-ভিত্তিক উদ্যোগ হিসেবে আমাদের দেশের ডিজিটাল সম্পদে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের শীষ হায়দার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের যুগ্ম সচিব ও আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তাঁরা এই ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
এই প্রতিযোগিতা দেশের সাইবার নিরাপত্তার মানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে অনুষ্ঠানের ডিরেক্টর এবং বাগ বাউন্টি কমিউনিটি বাংলাদেশের ফাউন্ডার সৈয়দ মুশফিক হাসান তাহসিন আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন, এই ধরনের প্রতিযোগিতা সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে গোল্ড স্পন্সর হিসেবে ছিলো অফেন্সিভ সিকিউরিটি, সিলভার স্পন্সর হিসেবে ছিলো পেনটেস্টারল্যাব, ব্রোঞ্জ স্পন্সর হিসেবে ছিলো বাউন্টি সিকিউরিটি, টেকনোলজি পার্টনার হিসেবে ছিলো থ্রেটসিমস, হোস্টিং পার্টনার হিসেবে ছিলো গটমাইহোস্ট, মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিলো দি ফ্রন্ট পেজ এবং ইনফোসেক বুলেটিন, কমিউনিটি পার্টনার হিসেবে ছিলো সিটিএফ কমিউনিটি বাংলাদেশ এবং দি টিম ফিনিক্স, ডিজিটাল পার্টনার হিসেবে ছিলো বাংলাদেশ সোসাইটি ফর এন্ট্রেপ্রেনিউর ইকোসিস্টেম ডেভেলপমেন্ট-বি-সিড।
প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করেছে বাগ বাউন্টি কমিউনিটি বাংলাদেশ। প্রোগ্রামটির টাইটেল স্পনসর ছিল হ্যাকারওয়ান, সহযোগী স্পনসর হিসেবে ছিল বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স।
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...