১৩ ঘন্টা আগে
১৪ ঘন্টা আগে
১৪ ঘন্টা আগে
১৪ ঘন্টা আগে
ছবি: সংগৃহীত
মূলত, বাজারে তাঁদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ভোক্তার আচরণ ও অর্থনৈতিক প্রবণতায় কতটা প্রভাব ফেলছে এবং সার্বিকভাবে তাঁরা বাজারে কতটা আধিপত্য বিস্তার করে আছে- এটা বোঝাতেই গত বছর (২০২৩) ব্যাংক অব আমেরিকার বিশ্লেষক মাইকেল হার্টনেট ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন সিনেমাটির অবতারণা করেন।
বিখ্যাত ওয়েস্টার্ন অ্যাকশন সিনেমা ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন-এর মতোই প্রযুক্তি বিশ্বেও আছে ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন। শেয়ার বাজারে ৭টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বাজার মূলধন (বা মার্কেট ক্যাপিটাল) এবং তাঁদের আর্থিক পারফর্মেন্সের উপর ভিত্তি করেই এই নামকরণ করা হয়েছে।
মূলত, বাজারে তাঁদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ভোক্তার আচরণ ও অর্থনৈতিক প্রবণতায় কতটা প্রভাব ফেলছে এবং সার্বিকভাবে তাঁরা বাজারে কতটা আধিপত্য বিস্তার করে আছে- এটা বোঝাতেই গত বছর (২০২৩) ব্যাংক অব আমেরিকার বিশ্লেষক মাইকেল হার্টনেট ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন সিনেমাটির অবতারণা করেন।
মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রতিভূ এই ৭টি প্রতিষ্ঠান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি, ক্লাউড কম্পিউটিং, অনলাইন গেমিং এবং উন্নত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার পণ্যের উপর ফোকাস করে বাজারে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে সচেষ্ট হয়েছে। তাহলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
মাইক্রোসফট: ১৯৭৫ সালে বিল গেটসের প্রতিষ্ঠিত মাইক্রোসফট মূলত তাঁদের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এবং অফিস সফটওয়্যার স্যুটের জন্য বিখ্যাত। তাঁদের সবচেয়ে জনপ্রিয় অফিস সফটওয়্যারগুলো হচ্ছে এমএস ওয়ার্ড, এমএস এক্সেল ও এমএস পাওয়ার পয়েন্ট। এছাড়া বিং সার্চ ইঞ্জিন, আউটলুক মেইল সার্ভিস এবং এজ ব্রাউজারের মতো প্রোডাক্টগুলোও বহুল ব্যবহৃত। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে এআই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েও বিভিন্ন সেবা নিয়ে এসেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে তাঁদের বাজার মূল্য ৩.০৪৩ ট্রিলিয়ন ডলার।
অ্যাপল: ১৯৭৬ সালে স্টিভ জবস ও স্টিফেন ওজনিয়াকের প্রতিষ্ঠিত অ্যাপল এই মুহূর্তে বাজার মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী প্রতিষ্ঠান। শেয়ার বাজারে তাঁদের সাম্প্রতিক বাজার মূল্য ৩.৩৮৭ ট্রিলিয়ন ডলার। আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবনী প্রোডাক্ট নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অ্যাপলের জুড়ি নেই। অ্যাপলের তৈরি প্রোডাক্টের মধ্যে রয়েছে: আইফোন, ম্যাক পার্সোনাল কম্পিউটার ও ল্যাপটপ, আইপ্যাড, অ্যাপল ওয়াচ এবং অ্যাপল টিভি।
অ্যালফাবেট: সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট। গুগলের পাশাপাশি তাঁদের ক্লাউড ও অ্যাপ-ভিত্তিক জনপ্রিয় সার্ভিসগুলোর মধ্যে রয়েছে: ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব, ই-মেইল সার্ভিস জিমেইল, ক্রোম ইন্টারনেট ব্রাউজার, অনলাইন স্টোরেজ সার্ভিস ইত্যাদি। তাঁদের সাম্প্রতিক মার্কেট ক্যাপিটাল ১.৯৪৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
মেটা: সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম এবং জনপ্রিয় ইন্সট্যান্ট মেসেজিং সার্ভিস হোয়াটসঅ্যাপ এর মূল প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মেটা। পৃথিবীব্যাপী ৩৫৯ কোটি মানুষ অর্থাৎ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৭৭ শতাংশ বর্তমানে মেটার কোনো একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে থাকে। ২০০৪ সালে মার্ক জাকারবার্গের প্রতিষ্ঠিত মেটার বর্তমান বাজার মূল্য ১.২৯৫ ট্রিলিয়িন ডলার।
এনভিডিয়া: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-ভিত্তিক চিপ তৈরিতে আধিপত্য বিস্তার করা এনভিডিয়ার বলতে গেলে সুবর্ণ সময় চলছে এখন। বিশ্বব্যাপী এআই পণ্যের বিশাল চাহিদার প্রেক্ষাপটে গত এক বছরে তাঁদের শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে তর তর করে। এই মুহূর্তে তাঁদের বাজার মূল্য ২.৬৪৯ ট্রিলিয়ন ডলার হলেও কিছু দিন আগেও অ্যাপল ও মাইক্রোসফটের সাথে ৩ ট্রিলিয়ন-ক্লাবের সদস্য ছিলো প্রতিষ্ঠানটি। এক সময় তাঁদের তৈরি গ্রাফিক্যাল প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ) গেমিং ও অন্যান্য হাই-এন্ড পিসি’র জন্য ব্যবহার করা হতো। এর পাশাপাশি এখন এআই-ফোকাসড পিসি ও সিস্টেমের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিশালী চিপ তৈরিতেও এনভিডিয়ার অবস্থান সবার উপরে।
অ্যামাজন: বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট হলো অ্যামাজন। বর্তমানে তাঁদের বাজার মূল্য ১.৮৫ ট্রিলিয়ন ডলার। ১৯৯৪ সালে অ্যামাজনের শুরুটা অনলাইনে বই বিক্রির মাধ্যমে হলেও এখন মোটামুটি সব ধরণের প্রোডাক্টই বিক্রি হয় এই ই-কমার্স মার্কেটপ্লেসটির মাধ্যমে। পাশাপাশি ক্লাউড-ভিত্তিক বিভিন্ন সেবাও প্রদান করে থাকে জেফ বেজোসের প্রতিষ্ঠিত অ্যামাজন।
টেসলা: বর্তমান বিশ্বের উদ্ভাবনী উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান টেসলার যাত্রা শুরু হয় ২০০৩ সালে। বর্তমানে বৈদ্যুতিক গাড়ি বা ইলেক্ট্রিক ভেহিকলের (ইভি) বাজারে সবচেয়ে পরিচিত ব্র্যান্ড টেসলা। তাঁদের তৈরি ‘টেসলা মডেল ওয়াই’ এই মুহুর্তে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ি।
টেসলার বর্তমান বাজার মূল্য ৬৭২.৭৯১ বিলিয়ন ডলার। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কারণে তাঁদের বাজার মূল্য অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি তাঁদের পূর্বঘোষিত বহুল আকাঙ্ক্ষিত সম্পূর্ণ স্বয়ংচালিত গাড়ি বা সেলফ-ড্রাইভিং কার বাজারে নিয়ে আসলে তাঁদের শেয়ার দরে আবারও ঊর্ধ্বগতি দেখা যাবে বলেই বাজার বিশ্লেষকদের অনেকে মত দিয়েছেন।
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...