৯ ঘন্টা আগে
১০ ঘন্টা আগে
ছবি: সংগৃহীত
দেশের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি উদ্ভাবনী সমাধান দেওয়া প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটি বিটিআরসিকে এ সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম (সিবিভিএমপি) তৈরি করে দিয়েছিল। প্রকল্পটিকে একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন বলা হয়েছে, যা বাংলাদেশে বায়োমেট্রিক সিম যাচাইকরণে অনবদ্য পরিবর্তন এনেছে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অস্কারখ্যাত এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্সে (অ্যাপিকটা) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিবিভিএমপি প্রকল্প।
দেশের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি উদ্ভাবনী সমাধান দেওয়া প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটি বিটিআরসিকে এ সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম (সিবিভিএমপি) তৈরি করে দিয়েছিল। প্রকল্পটিকে একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন বলা হয়েছে, যা বাংলাদেশে বায়োমেট্রিক সিম যাচাইকরণে অনবদ্য পরিবর্তন এনেছে।
এবার অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডে ২০টি দেশের ১৮০টি দল অংশগ্রহণ করে। অস্ট্রেলিয়া, চীন, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, চাইনিজ তাইপেই, মালদ্বীপসহ ১৭টিরও বেশি দেশের প্রকল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সেরা হয়ে দেশের জন্য গৌরব এনেছে সিনেসিস আইটি।
অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪-এ বাংলাদেশ থেকে সোশিয়ান এআই, সিনেসিস আইটি, স্মার্ট ট্রেন্ড ডিজটাল, ইক্সরা (আইএসওআরএ) সলিউশন্স মিলে চারটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। সেখান হতে বিশ্বমঞ্চে লড়ে সিনেসিস আইটি পাবলিক সেক্টর অ্যান্ড গভর্নমেন্ট সেকশনে ডিজিটাল গভর্নমেন্ট ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। এ অ্যাওয়ার্ড এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল জুড়ে অসামান্য প্রযুক্তির নানান সমাধানকে স্বীকৃতি দেয়।
সিবিভিএমপির গৌবরময় এ অর্জন নিয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, ‘দেশের প্রজেক্ট হিসেবে আমি গর্বিত। এটা আনন্দের ব্যাপার। আমার মনে আছে, এটা যখন আমরা শুরু করি তখন বৈশ্বিক মোবাইল অপারেটরদের এপেক্স বডি জিএসএমএ বলেছিল, এটায় নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট পড়বে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন আমরা এটা করে ফেললাম এবং পজিটিভ ইম্প্যাক্ট পেতে থাকলাম তখন এই জিএসএমএই আসছে তখন আমার ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য যে, আমরা এটা কীভাবে করলাম।
তিনি বলেন, ‘সিবিভিএমপির এ ড্রাইভটা তখন কো-অর্ডিনেট করছিলাম আমি। তখন অনেক বাধা-বিপত্তি ছিল। কেন মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হচ্ছে? আবার ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই চায়নি, তারা ভাবেছিলেন তাদের ব্যবসা নষ্ট হবে।’
এমদাদ উল বারী বলেন, ‘সিকিউরিটি পারপাসে আমরা কাজটি করেছিলাম। অনেক মানুষকে বিভিন্নভাবে ঠকানো হচ্ছিল-ভুয়া সিম দিয়ে বিভিন্ন নামে। ওখান হতেই প্রজেক্টটির আইডিয়া আসছিল যে, একটা মানুষের আইডেন্টি কিভাবে তৈরি করা যায়। এতে অনেক অপরাধী চিহ্নিত করা গেছে, এটা খুবই পজিটিভ একটা জিনিস।’
উল্লেখ্য, সিবিভিএমপি বাংলাদেশের বৃহত্তম ডেটাবেস, যা বায়োমেট্রিক সিম রেজিস্ট্রেশন পর্যবেক্ষণ ও যাচাই করার মাধ্যমে, নিরাপদ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে কোটি কোটি সিম কার্ড নথিভুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে শত শত লেনদেন পরিচালনা করার ক্ষমতা রয়েছে। এ ব্যবস্থাটি এতটাই শক্তিশালী যে ২০১৭ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে এটি আজ পর্যন্ত কোনো ডাউন টাইমের মুখোমুখি হয়নি।
সিবিভিএমপি সিম কার্ড কেনার জন্য পরিচয় যাচাইকরণের পাশাপাশি অবৈধ সিম ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে। এ ব্যবস্থাটি সরকারি রাজস্ব নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কেন্দ্রীয় নীতির বাস্তবায়নও নিশ্চিত করেছে। এটি বাংলাদেশে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করেছে। এ মাধ্যমে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নাগরিক পরিচয় যাচাইকরণ, অপরাধ প্রতিরোধ এবং পর্যবেক্ষণ।
প্রত্যেক ব্যক্তিকে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে চিহ্নিত করা সম্ভব যাতে প্রত্যেক ব্যক্তিকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায় যেন দেশের আইন ও বিধিমালা স্পষ্টভাবে প্রয়োগ করা যায়। ফলে ফোনের মাধ্যমে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ নিয়ন্ত্রিত করা সহজ হয়। এর সাফল্য প্রমাণ করে বিদেশি কোনো সহায়তা ছাড়াই বড় আকারের জাতীয় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দেশীয় কোম্পানি সিনেসিস আইটির সক্ষমতা রয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাত বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে এ অর্জন বাংলাদেশের জন্য গর্বের, যা বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পে বাংলাদেশ হিসেবে জাতির ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিকে তুলে ধরেছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য উদ্ভাবন কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারে তা সিনেসিস আইটি দেখিয়েছে অ্যাপিক্টা অ্যাওয়ার্ডস অ্যাওয়ার্ড অর্জনের মাধ্যমে।
সিবিভিএমপি ছাড়াও দেশীয় এ কম্পানিটি ই-রিটার্ন, ইটিআইএন, এনইআইআর, এক্সপোর্ট ইমপোর্ট সার্টিফিকেশন, ন্যাশনাল জব পোর্টাল, ন্যাশনাল স্কিলস পোর্টাল, বিসিসির জন্য ইউনিফাইড কমিউনিকেশন সিস্টেম, ন্যাশনাল টেলিহেলথ কল সেন্টার, স্বাস্থ্য বাতায়ন, ১৬২৬৩,ইমিগ্রেশন ও কল সেন্টার, ওয়াসা কল সেন্টার, টেন্ডারবাজার ডটকম এবং আরো অনেক জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে।
সিনেসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যখন এ কাজ করেছি, তখন দেশের জন্য বড় কিছু করছি এ অনুপ্রেরণায় এগিয়ে গেছি। বিশ্বে এখন সিবিভিএমপি একটি আদর্শ। মোবাইল আইডেন্টিটি সলিউশনের কথা আসলে সবার আগে বাংলাদেশের নাম আসে। আর এটি দেশি কম্পানির সক্ষমতার প্রমাণ।’
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...