মঙ্গলবার

ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ


টেলিকম

স্বল্প-মেয়াদী ইন্টারনেট প্যাকেজ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বিকাল ৫:০৩

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

সরকার যখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ১, ২ অথবা ৩দিন মেয়াদের মতো স্বল্প মেয়াদী ইন্টারনেট প্যাকেজ বাদ দিয়ে প্যাকেজ সংখ্যা কমিয়ে পরোক্ষভাবে ইন্টারনেটের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যা এই পরিকল্পনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। 

স্বল্প-আয় ও প্রান্তিক গ্রাহকদের ব্যবহৃত স্বল্প-মেয়াদী ও স্বল্প-মূল্যের ইন্টারনেট প্যাকেজ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গ্রাহক সমাবেশ ও পরবর্তীতে বিক্ষোভ প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপিও দিতে চেয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, প্যাকেজ সংখ্যা কমানোর নামে স্বল্প মেয়াদী প্যাকেজ তুলে দেওয়া হলে তা গ্রাহকের প্যাকেজ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে, গ্রাহকের ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বৃদ্ধি করবে। অন্যদিকে তা নির্দিষ্ট মোবাইল অপারেটরের ব্যবসা বৃদ্ধি করে বাজার প্রতিযোগিতার সাম্যাবস্থা নষ্ট করবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বক্তব্যে বলেন, বাজারে গিয়ে জনগণ যদি দেখে এক কেজির নিচে কোন বাটখারা নেই তাহলে সাধারণ জনগণ তার পণ্য কিনবে কিভাবে। ঠিক একই ভাবে ৩ দিনের মেয়াদী প্যাকেজ বাতিল করে সাধারণ মানুষকে ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত করা জনস্বার্থ বিরোধী।

আরও বক্তব্য দেন জাতীয় তরুণ সংঘের চেয়ারম্যান ফজলুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু, গ্রীণ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ খান, এনডিএম’র সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন নুরুজ্জামান হীরা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য শাজাহান খান, ডা. আমিনুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শেখ ফরিদ প্রমুখ।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মোবাইল অপারেটরদের ব্যবসা বাড়ানোর হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সরকার, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো একজোট হয়ে কাজ করছে। বর্তমান যুগের বাস্তবতায় মােবাইল ইন্টারনেট এখন কোনো বিলাসী পণ্য-সেবা নয়, বরং খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের মতো এটিও একটি মৌলিক পরিষেবা হয়ে উঠেছে। অথচ নানা সময় বিভিন্ন ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে সরকার অথবা সেবাদাতা মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বাড়িয়েছে। যেখানে অপারেটরদের এ হেন অশুভ তৎপরতা রুখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির এগিয়ে আসার কথা সেখানে উল্টো মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বাড়াতে তারা যেন অপারেটরের সহযােগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, সরকার যখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ১, ২ অথবা ৩দিন মেয়াদের মতো স্বল্প মেয়াদী ইন্টারনেট প্যাকেজ বাদ দিয়ে প্যাকেজ সংখ্যা কমিয়ে পরোক্ষভাবে ইন্টারনেটের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যা এই পরিকল্পনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। গত ৩ সেপ্টেম্বর জারি করা এক নির্দেশনায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল অপারেটরদের ১৫ অক্টোবর থেকে ৩ ও ১৫ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তকে স্ববিরোধী ও গণবিরোধী বলা হয়েছে।

সংগঠনটি বলছে, বিটিআরসির নিজস্ব জরিপেই উঠে এসেছে, মানুষ প্যাকেজ বেছে নেওয়া স্বাধীনতা চায়। যেখানে অপারেটর ভেদে বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ গ্রাহক ৩ দিন বা তারও কম মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজ ব্যবহার করেন সেখানে এই সিদ্ধান্তকে গণবিরোধী বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। টেলিযোগাযোগ খাতের বিশেষজ্ঞ ও মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, এর মাধ্যমে একদিকে ভোক্তাদের পছন্দের স্বাধীনতা সীমিত করা হবে, অপরদিকে এই উদ্যোগটি তৃণমূল, নিম্ন-আয়ের ও তরুণদের ওপর ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বৃদ্ধি করবে ।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৩৮৩ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর