শুক্রবার

ঢাকা, ৩ মে ২০২৪

সর্বশেষ


খবর

সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতের আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতির সুবিধা মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩০ জুন

প্রকাশ: ৩ এপ্রিল ২০২৪, সকাল ৪:৩৮

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

বিগত ১৩ বছর ধরে ২৭টি ডিজিটাল সেবা খাতে কর অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।  আগামী ৩০ জুন অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অব্যাহতি তুলে নেওয়া হলে আইটি খাতের এসব প্রতিষ্ঠানকে করপোরেট কর দিতে হবে। নিয়ম অনুসারে এধরনের প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করের পরিমাণ ২৭ শতাংশ।

জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা অনুযায়ী সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতের আয়কর এবং মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতির সুবিধা শেষ হচ্ছে এবছরের জুন মাসের ৩০ তারিখ। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। কেননা এই আয়কর এবং ভ্যাট যদি অব্যাহতি দেওয়া না হয়, তবে পণ্যসেবা উৎপাদন ব্যয় আগের তুলনায় বেড়ে যাবে। কমে যাবে মুনাফার হার। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগে উৎসাহ হারাবে ব্যবসায়ীরা।

ফলে এর প্রভাব পড়বে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ক্রমবর্ধমান কর্মসংস্থানের সুযোগ  সৃষ্টিতেও। বিগত ১৩ বছর ধরে ২৭টি ডিজিটাল সেবা খাতে কর অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।  আগামী ৩০ জুন অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অব্যাহতি তুলে নেওয়া হলে আইটি খাতের এসব প্রতিষ্ঠানকে করপোরেট কর দিতে হবে। নিয়ম অনুসারে এধরনের প্রতিষ্ঠানের করপোরেট করের পরিমাণ ২৭ শতাংশ।

দেশে বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্পের পরপরই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনাময় খাত হিসাবে বিবেচনা করা হয় সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতকে। সরকারও অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনা করে আসছে এই খাতকে। বিদেশি সফটওয়্যার এবং আইটিইস খাত হতে বর্তমান রফতানি  আয় প্রায় ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইটিইএস-এর আওতাভুক্ত সেবাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিশ্ব বাজারে সুনামের সাথে কাজ করছে বিপিও খাত।

এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে কাজ করছে দেশের ই-কমার্স খাত। সবমিলিয়ে দেশের অর্থনীতেতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান ক্রমবর্ধমান। সরকারের রপ্তানিবান্ধব বেশকিছু উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে একটি নির্ভরযোগ্য রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ৬.৫ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন এবং অন্যান্য আইটি সেক্টরে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ কর্মরত আছেন।

ফ্রিল্যান্সাররা অনলাইন আউটসোর্সিং কাজের মাধ্যমে এখন বার্ষিক ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছেন। গত এক দশকে বাংলাদেশের আইটি এবং আইটিইএস খাতে উৎসাহব্যঞ্জক বিনিয়োগ এসেছে। শুধু স্টার্ট-আপ থেকেই ৮৫০ মিলিয়নের বেশি বিনিয়োগ এসেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ২০২৪ সাল পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয়কর এবং মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি সুবিধা এক্ষেত্রে প্রধান নিরামক হিসেবে কাজ করছে। এছাড়াও সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতি সহায়তার মাধ্যমে এ খাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

তাই এই ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারের এই ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা এবং সুযোগগুলো বলবৎ থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। যার মধ্যে আয়কর এবং মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতির সুবিধাটি গুরুত্বপূর্ণ। এই  সুবিধাটি আগামী ২০৩১ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকলে এই খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট শিল্পখাতগুলোর ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে বিশ্বাস করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী গোষ্ঠী। বিপরীতে দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবসায়িক ব্যয় অনেকাংশে বেড়ে গিয়ে বৈশ্বিকভাবে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম  লক্ষ্য  হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন।

অন্যদিকে ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পুরনো হওয়ার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ অপরিহার্য, নিঃসন্দেহে দেশীয়ভাবে অন্যতম মূল্যসংযোজনকারী খাত হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিষেবা খাত এই রপ্তানি বহুমুখীকরণের অন্যতম উৎস হওয়ার সম্ভাবনা রাখে এছাড়াও, স্মার্ট  বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই খাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা প্রসূত এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায় তরুণ উদ্যোক্তা ও পেশাজীবীসহ বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছর থেকে এ অব্যাহতির সময়সীমা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মনে করেন তারা।

এই বছর ১০ মার্চ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পাঁচ শীর্ষ সংগঠন (বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি, বাক্কো এবং ই-ক্যাব) সম্মিলিতভাবে অর্থমন্ত্রীর কাছে জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা অনুযায়ী সফটওয়্যার ও আইটিইএস খাতের আয়কর এবং মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতির সুবিধা ২০৩১ সাল পর্যন্ত বলবৎ রাখার দাবি জানিয়ে লিখিত আবেদন করে। যার বিপরীতে এখন পর্যন্ত কোন আশার বাণী শোনেনি সংগঠনগুলো।

এরই মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করেছে বলে জানিয়েছে বাক্কোর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ। তিনি বলেন, আমরা যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। তবে এখনও এই বিষয়ে কোন ইতিবাচক সাড়া আমরা পাইনি। এর মধ্যে মাস গড়িয়ে যাচ্ছে এবং ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে জুন মাস। সেসঙ্গে আসছে বাজেট। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আমরা উৎবিঘ্ন এবং চিন্তিত। এক্ষেত্রে সরকাররে আন্তরিক হস্তক্ষেপ কামনা করছি আমরা।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ২২৯ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর