বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী নারী কোটিপতি হলেন লুসি গুও

কম্পিউটার সায়েন্সের ডিগ্রি শেষ করার আগেই পড়াশোনা ছেড়েছিলেন লুসি গুও। অথচ সেই গুও-ই আজ বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী দক্ষতা অর্জনকারী নারী কোটিপতি। ফোর্বসের তালিকায় তাঁর বর্তমান নেটমূল্য ১.৩ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার। তার বয়স মাত্র ৩০ বছর।
চীনা অভিবাসী বাবা-মায়ের মেয়ে গুও বড় হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা তাঁকে শিখিয়েছিলেন সাশ্রয়ী জীবনযাপন ও অর্থের গুরুত্ব। সেই শিক্ষা থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে পোকেমন কার্ড, রঙিন পেন্সিল কিংবা যেকোনো জিনিস লেনদেন করে অর্থ রোজগার শুরু করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজের উপার্জন সুরক্ষিত রাখতে পেপ্যাল অ্যাকাউন্ট পর্যন্ত খুলে ফেলেন।
পরের ধাপে তিনি ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ব্যবসা শুরু করেন। অনলাইন গেম Neopets-এ বিরল প্রাণী আর গেমের মুদ্রা বিক্রি করে বাস্তব অর্থ আয় করতেন। পরে কোডিং শেখার পর তৈরি করেন গেমে ব্যবহারের মতো বট, যা বিক্রি করে ভালো অঙ্কের টাকা পান। এভাবেই ধীরে ধীরে ওয়েবসাইট তৈরি, বিজ্ঞাপন থেকে আয় ও ডিজিটাল টুল বানানোতে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেন তিনি।
কম্পিউটার সায়েন্সে কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও মাত্র এক বছর বাকি থাকতে ডিগ্রি অসম্পূর্ণ রেখে বেরিয়ে আসেন গুও। এই সিদ্ধান্ত তাঁর বাবা-মায়ের জন্য ছিল বিশাল ধাক্কা। পরে গুও যোগ দেন থিয়েল ফেলোশিপে, যেখানে তরুণ উদ্যোক্তারা পান দুই লাখ ডলার সহায়তা। নিজের ভাষায়, `আমি আসলে শুধু নিজের ওপর বাজি ধরেছিলাম।'
২০১৬ সালে গুও সহ-প্রতিষ্ঠা করেন স্কেল এআই, একটি ডেটা-লেবেলিং কোম্পানি, যা পরবর্তীতে মেটা কিনে নেয় ২৫ বিলিয়ন ডলারে। এখান থেকেই শুরু হয় তাঁর বৈপ্লবিক সাফল্য। বর্তমানে তিনি পরিচালনা করছেন Passes, কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য একটি মনেটাইজেশন প্ল্যাটফর্ম। পাশাপাশি ২০১৯ সালে শুরু করেছেন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান Backend Ventures, যা প্রাথমিক পর্যায়ের প্রযুক্তি স্টার্টআপে বিনিয়োগ করে।
লুসি গুওর গল্প তরুণদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা। তিনি প্রমাণ করেছেন, সব সাফল্যের পথ ডিগ্রির ভেতরেই সীমাবদ্ধ নয়; কখনো কখনো সাহস করে ভিন্ন পথে হাঁটাও পারে ভবিষ্যৎ বদলে দিতে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া