ছবি: সংগৃহীত
একটি মানসম্মত ইন্টারনেট সেবা যদি না থাকে, তা হলে ঈদের আনন্দ নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের নিয়ন্ত্রক কমিশন বিটিআরসি সেবার মানের দিকে নজর দেয় না। যে কারণেই প্রান্তিক পর্যায়ে নেটওয়ার্কের মান উন্নয়ন ১৭ বছরেও হয়নি।
বর্তমান সময়ে সাধারণ মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট সেবা। একটি মানসম্মত ইন্টারনেট সেবা যদি না থাকে, তা হলে ঈদের আনন্দ নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের নিয়ন্ত্রক কমিশন বিটিআরসি সেবার মানের দিকে নজর দেয় না। যে কারণেই প্রান্তিক পর্যায়ে নেটওয়ার্কের মান উন্নয়ন ১৭ বছরেও হয়নি।-বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের অপারেটরগুলো ট্রাফিক বুঝে নেটওয়ার্ক তৈরি করে। কারণ তাদের গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার চেয়ে ব্যবসা এবং বিনিয়োগের রিটার্ন অগ্রাধিকার পায়। ঈদের সময় প্রান্তিক পর্যায়ে প্রচুর ট্রাফিকের চাপ থাকে, কিন্তু এলাকার বর্গ কিলোমিটার কিংবা আয়তন বা জনসংখ্যার ঘনত্ব অনুযায়ী নেই কোনো বিটিএস। আবার বিটিএস থাকলেও এ বিটিএসগুলো রক্ষণাবেক্ষণ খুব একটা নেওয়া হয় না। আবার প্রান্তিক পর্যায়ে ফাইবার কানেক্টিভিটিও থাকে না। ফলে নেটওয়ার্কের মান পূর্বে থেকে যেখানে কম সেখানে অধিক সংখ্যক ট্রাফিকের চাপে নেটওয়ার্ক আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে ঈদের মধ্যে ঘরে ফেরা মানুষ নেটওয়ার্ক বিভ্রান্তিতে পড়ে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব অনুযায়ী, ঈদের ছুটিতে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে প্রায় দেড় কোটি মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যে যাত্রা করবে। এর আগে বছর ২০২৪ ও ২০২৩ সালে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১ কোটির বেশি সিমধারী ঢাকা ছেড়েছিলেন। মানুষের সংখ্যায় যা আরও বেশি। সিমধারী বলতে একজন মানুষকে বোঝানো হয়েছে (ইউনিক ইউজার)। তাদের সঙ্গে প্রবীণ, নারী-পুরুষ ও শিশুরাও থাকতে পারে, যারা মোবাইল ব্যবহার করে না। ফলে প্রকৃতপক্ষে কত মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন, সেই হিসাব পাওয়া কঠিন। তবে প্রত্যেকেই মোবাইল ইন্টারনেটের উপকারভোগী।
বিটিআরসির তথ্যমতে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রামীণফোন, রবি অজিয়াটা, বাংলালিংক ও রাষ্ট্রীয় মালিকানধীন প্রতিষ্ঠান টেলিটকসহ চার অপারেটর মিলে মোট গ্রাহকসংখ্যা ১৮ কোটি ৬৫ লাখ। এরমধ্যে গ্রামীণফোনের ৮ কোটি ৪৯ লাখ, রবি অজিয়াটা ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৬ হাজার, বাংলালিংক ৩ কোটি ৮ লাখ ৬৪ হাজার ও টেলিটকের গ্রাহক ৬ লাখ ৫৬ হাজার।
এ মোবাইল গ্রাহকদের মধ্যে মোট ইন্টারনেট গ্রাহক রয়েছে ১৩ কোটি ৭০ হাজার। এর মধ্যে শুধু মোবাইল গ্রাহক রয়েছে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার ও আইএসপি ও পিএসটিএন গ্রাহক রয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ৪০ হাজার।
এত গ্রাহক ও ইন্টারনেট ব্যবহারকরীর বিপরীতে সারা দেশে মোবাইল টাওয়ার রয়েছে ৪৫ হাজার ৯৬১টি। এরমধ্যে জিপির ১২ হাজার ২৫০টি, রবির ২ হাজার ২০৩টি, বাংলালিংকের ৩ হাজার ৯৮৬টি, টেলিটকের ৩ হাজার ৩২৩টি। এ ছাড়া ইডটকোর ১৬ হাজার ৭৯৭টি, সামিটের ৫ হাজার ২৭টি, কীর্তনখোলার ৯৩০টি, ফ্রন্টিয়ার ৯৩১টি ও বিটিসিএলের ৫১৪টি।
২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ। মাঝখানে কেটে গেছে ১৭টি বছর। এখনও দুরবস্থা কাটেনি মোবাইল নেটওয়ার্কে। ভোগান্তি কমেনি গ্রাহকদের।
এ প্রসঙ্গে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস শারফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, এ বছর গ্রামীণফোন ট্রাফিক উন্নয়নের জন্য উন্নত ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং পূর্বাভাস মডেল ব্যবহার করেছে এবং সেই অনুযায়ী নেটওয়ার্ক রিসোর্স নিশ্চিত করেছে। সারা দেশে মসৃণ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনার জন্য রিয়েল টাইম অপটিমাইজেশন ক্ষমতা থাকবে। যেমন, প্রায় ৭ হাজার ৫০০ টিআরএক্স সংযোজনসহ নেটওয়ার্কের প্রায় ১০ হাজার সাইটে ক্ষমতা সম্প্রসারণ। মসৃণ চলাচলের জন্য হার্ড এবং সফট উভয় কনফিগারেশনের মাধ্যমে হাইওয়ে/ট্রাফিক হট স্পটে অতিরিক্ত ক্ষমতা। ট্রাফিক ঘনত্ব বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন বিশেষ ধরনের বাজারের স্থানগুলোতে ক্ষমতা বৃদ্ধি। যেকোনো অবাঞ্ছিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট মোকাবিলার জন্য প্রায় ৪ হাজার সাইটের জন্য পাওয়ার ব্যাকআপ উন্নত করা হয়েছে। সর্বোপরি, আরও ভালো ঈদ অভিজ্ঞতার জন্য মাঠে প্রায় ২ হাজার লোকের সঙ্গে ২৪/৭ মনিটরিং সিস্টেম সক্রিয় থাকবে।
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...