ছবি: সংগৃহীত
ব্রাউজার বাজারে ক্রোমের মনোপলি দীর্ঘদিনের। বাকি সব ব্রাউজারের মধ্যে অ্যাপলের সাফারি এবং মজিলা ফায়ারফক্স ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠান ক্রোমের সোর্সকোড ব্যবহার করেই তাদের ব্রাউজার তৈরি করছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে ইন্টারনেটের সব কনটেন্ট এবং বিজ্ঞাপনের ওপর মনোপলি বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে গুগলের বিরুদ্ধে। বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের দেওয়া প্রতিকারের রোডম্যাপে স্পষ্ট বলা হয়েছে, গুগলকে অবশ্যই ক্রোম ব্রাউজারের ব্যবসা বিক্রি করে দিতে হবে। ভবিষ্যতে ক্রোমের পাশাপাশি অ্যানড্রয়েডকেও স্বাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে বাধ্য হতে পারে গুগল।
ব্রাউজার বাজারে ক্রোমের মনোপলি দীর্ঘদিনের। বাকি সব ব্রাউজারের মধ্যে অ্যাপলের সাফারি এবং মজিলা ফায়ারফক্স ছাড়া বাকি সব প্রতিষ্ঠান ক্রোমের সোর্সকোড ব্যবহার করেই তাদের ব্রাউজার তৈরি করছে। ক্রোম এবং ক্রোমের কোড থেকে তৈরি ব্রাউজারগুলোর মধ্যে সার্চ সেবা হিসেবে গুগলকেই ডিফল্টভাবে দেওয়া থাকে। গুগলের অন্যান্য সেবা, যেমন-ইউটিউব, জিমেইল অথবা ডকস ও ক্রোম বা ক্রোমভিত্তিক ব্রাউজার ছাড়া ভালোভাবে কাজ করে না। ক্রোমের শক্ত অবস্থান কাজে লাগিয়ে গুগল তার আধিপত্য প্রতিনিয়ত বাড়াচ্ছে-এমনটাই রায় দিয়েছে ডিওজে।
যদি ক্রোম অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি হয়ে যায় অথবা আলাদা স্বাধীন কম্পানিতে পরিনত হয়, তখন আর গুগলের শক্ত মনোপলি রইবে না।
প্রাথমিকভাবে দেওয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে অবশ্য গুগল আগামী বছর আপিল করতে পারবে। ক্রোম বিক্রি ছাড়াও অ্যাডসেন্সের সঙ্গে গুগল সার্চের তথ্য আদান-প্রদান এবং ইন্টারনেট সার্চ র্যাংকিংয়ের অ্যালগরিদমের পরিবর্তনের মতো কয়েকটি বিষয় কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে। তবে ডিওজে এর মুখপাত্ররা বলেছেন, আপিলের পরও ক্রোম বিক্রির বিষয় তারা অটল থাকবেন।
অ্যানড্রয়েড হবে স্বাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান
অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমও একই কারণে গুগলের খপ্পর থেকে বের করা উচিত বলে মনে করছেন ডিওজের বেশ কিছু বিচারক। আজ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম অ্যানড্রয়েড। উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স বা আইওএসের চেয়ে বহু গুণ বড় বাজার অ্যানড্রয়েড তথা গুগলের দখলে। প্রতিটি ডিভাইসেই গুগলের সেবাগুলো ইনস্টল করা থাকে।
অ্যাপের জন্য গুগল প্লে, ই-মেইলের জন্য জিমেইল, ডিভাইসের ডাটা সংরক্ষণের জন্য গুগল ক্লাউড এবং ব্রাউজিংয়ের জন্য ক্রোম ডিভাইস চালুর সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবহারকারীদের জন্য প্রস্তুত থাকে, তারা পরে আর সেগুলো ব্যবহার বন্ধ করে না।
বিষয়টিকে ডিওজে বড়সড় মনোপলির হাতিয়ার হিসেবে দেখছে। যদি গুগলকে অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের বিক্রি করতে বাধ্য করা না-ও হয়, গুগল প্লে, ক্রোম, জিমেইল এবং ইউটিউব বিল্ট-ইন দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।
আসছে রোডম্যাপও
গুগলের জন্য দেওয়া রোডম্যাপে আরো বলা হয়েছে, তারা অন্য প্রতিষ্ঠানকে গুগল সার্চ ব্যবহারের জন্য অথবা গুগল ছাড়া অন্য সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার না করার জন্য আর্থিক প্রণোদনা দিতে পারবে না। তাদের এখন থেকে গুগলের অন্যান্য সেবায় গুগল সার্চের পাশাপাশি অন্যান্য সার্চ সেবা ব্যবহারেরও উপায় রাখতে হবে, যেমন-ইউটিউবে ভিডিও সার্চ করতে চাইলে ডাকডাকগো যাতে ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়াও গুগল সার্চের বেশ কিছু গোপনীয় তথ্য, যেমন-সার্চ ইনডেক্স, র্যাংকিং সিগন্যাল ও অন্যান্য করতে হবে সবার জন্য উন্মুক্ত।
আগামী বছরের মার্চে ডিওজে তাদের রোডম্যাপের পূর্ণাঙ্গ সংস্করণ দাখিল করবে। এপ্রিলে চাইলে গুগল তার বিরুদ্ধে করতে পারবে আপিল। ধরে নেওয়া যেতে পারে অন্তত আরো এক বছর ক্রোম এবং অ্যানড্রয়েড গুগলের হাতেই থাকছে, ভবিষ্যতে সেটা বদলাতেও পারে।
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...