ছবি: সংগৃহীত
রিয়েলমি বর্তমানে ইউরোপের চতুর্থ বৃহত্তম স্মার্টফোন রফতানিকারক। প্রযুক্তি বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান টেক ইনসাইটস ও কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে কোম্পানিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈশ্বিক রফতানি ১০ কোটি ইউনিটে উন্নীত করার রেকর্ড গড়েছিল। গত বছর এটি ২০ কোটি ইউনিটে পৌঁছায়।
ইউরোপে অবস্থান শক্ত করতে প্রিমিয়াম স্মার্টফোন বাজারের দিকে মনোযোগ দিয়েছে চীনের স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো। ফোল্ডেবল ডিভাইস, উন্নত ক্যামেরা ও সুপারফাস্ট চার্জারের মতো প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্রেতা আকর্ষণের সুযোগ দেখছে কোম্পানিগুলো।
আগামী তিন বছরের মধ্যে ইউরোপের বাজারে নিজেদের হিস্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্য শেনজেনভিত্তিক স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিয়েলমির। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত ইউরোপে বিক্রি ২৭৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। আগামী তিন-পাঁচ বছরের মধ্যে ইউরোপে তারা নিজেদের বাজার হিস্যা ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
রিয়েলমি বর্তমানে ইউরোপের চতুর্থ বৃহত্তম স্মার্টফোন রফতানিকারক। প্রযুক্তি বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান টেক ইনসাইটস ও কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে কোম্পানিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈশ্বিক রফতানি ১০ কোটি ইউনিটে উন্নীত করার রেকর্ড গড়েছিল। গত বছর এটি ২০ কোটি ইউনিটে পৌঁছায়।
রিয়েলমির প্রোডাক্ট মার্কেটিং বিভাগের প্রধান ফ্রান্সিস ওয়ং বলেন, ‘ইউরোপীয় বাজারে সফল হলে তা রিয়েলমির বৈশ্বিক বিক্রি বাড়াতে সহায়তা করবে।”আমরা সাশ্রয়ী দামের পণ্য দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে প্রিমিয়াম ফোন বিক্রির কৌশল নিয়েছি।’
তিনি জানান, ইউরোপীয় ক্রেতারা এখনো চীনা ব্র্যান্ড সম্পর্কে তুলনামূলক কম জানে। সাশ্রয়ী মূল্যের ডিভাইস নিয়ে তাদের আগ্রহও কম। এর অর্থ চীনা কোম্পানিগুলো এখনো এ বাজারে তেমন প্রভাব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।
কাউন্টারপয়েন্টের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউরোপের প্রিমিয়াম ফোনের বাজারে এখনো অ্যাপল ও স্যামসাং আধিপত্য বিস্তার করে আছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৭০০ ডলারের বেশি দামের ৯৪ শতাংশ ফোনই বিক্রি করেছে কোম্পানি দুটি। কয়েক বছর আগেও ১০ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল হুওয়ায়ে। কিন্তু ২০২০ সালের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও কিছু দেশে কোম্পানির ৫জি নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়ায় কোম্পানিটির প্রবৃদ্ধি থেমে যায়।
চলতি বছর চীনা স্মার্টফোন নির্মাতারা ইউরোপীয় বিক্রি বাড়ানোর জন্য নতুন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ফোল্ডেবল ডিভাইস, উন্নত ক্যামেরা ও সুপারফাস্ট চার্জারের মতো নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে বাজার ধরার চেষ্টা করছে তারা।
চীনা প্রতিষ্ঠান অনরের ইউরোপীয় প্রেসিডেন্ট টনি রান বলেন, ‘ইউরোপে ফোল্ডেবল ও ফ্লিপ প্রযুক্তির স্মার্টফোনের বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ আছে। চীনের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ এ বাজারে এটিই হতে পারে গেম-চেঞ্জার।’
প্রসঙ্গত, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অনর পশ্চিম ইউরোপে ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের শীর্ষ বিক্রেতা হিসেবে স্যামসাংকে ছাড়িয়ে গেছে।
টনি রান বলেন, কোম্পানির অনলাইন স্টোরে ফোল্ডেবল ফোন ক্রেতাদের ৬০ শতাংশ স্যামসাং বা অ্যাপলের ‘ডুয়োপলি’ থেকে ব্র্যান্ড বদল করে এসেছে। অনরের প্রিমিয়াম ফোল্ডেবল ফোন ম্যাজিক ভি৩-এর দাম প্রায় ২ হাজার ইউরো, যা ১ হাজার ৯৭৯ ইউরো দামের ১ টেরাবাইট স্টোরেজের আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের সঙ্গে তুলনীয়।
অন্যদিকে, অপ্পো গত মাসে ইউরোপে তাদের ফ্ল্যাগশিপ ফাইন্ড এক্স৮ সিরিজ চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। এর মাধ্যমে ব্র্যান্ডটি তাদের প্রিমিয়াম স্মার্টফোনের সিরিজ আবারো ফিরিয়ে এনেছে।
কোম্পানির বৈদেশিক বিপণন, বিক্রি ও পরিষেবা বিভাগের প্রেসিডেন্ট বিলি ঝ্যাং বলেন,”‘আমরা ইউরোপীয় বাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের পর ইউরোপে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষ বিক্রেতার তকমা ধরে রেখেছে শাওমি। আইডিসির পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রিমিয়াম বাজারে তাদের হিস্যা ৪ দশমিক ৩ শতাংশে বেড়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল।
প্রিমিয়াম ব্যান্ডগুলোর পাশাপাশি ট্রান্সশনের মতো সাশ্রয়ী মূল্যের ব্র্যান্ডগুলোও তাদের মিড লেভেলের স্মার্টফোন বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে।
স্মার্টফোন নির্মাতারা বলছেন, ইউরোপের মতো উন্নত বাজারে সফল হলে এটি তাদের উচ্চ মূল্যের বাজার যেমন জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সাহায্য করতে পারে।
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...