ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত বিভিন্ন প্রযুক্তির চিকিৎসা সেবায় এর আগে এআই-ইসিজি-এর যেসব সুবিধা পাওয়া যেত না, নতুন এই টুলে সেগুলো আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রযুক্তির অভাবনীয় অগ্রগতির সুবাদে মানুষের হৃদরোগের চিকিৎসা ও মৃত্যুর ঝুঁকি জানার কৌশল আবিষ্কার হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় একজন রোগীর হৃদরোগের ঝুঁকি কতটা রয়েছে এবং তার মৃত্যু কতদিনের মধ্যে ঘটতে পারে, এই ধরনের বিষয়ের পূর্বাভাস এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব। একটি বিশেষ এআই টুল ব্যবহার করে এসব তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে বলে একদল গবেষক।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি জার্নালে ‘ল্যান্সেট ডিজিটাল হেলথ’ নামের প্রকাশিত গবেষণা পত্রে আবিষ্কৃত এআই টুল বিষয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে জানানো হয়েছে এআই-এর সাহায্য নিয়ে হওয়া ইসিজি-এর সাহায্যে ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য সমস্যা এবং মৃত্যুর ঝুঁকি মাপা যাবে। তবে যদিও এই পরিকাঠামো এখনও প্রতিদিনের চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যবহার করা হচ্ছে না।
চিকিৎসায় আবিষ্কৃত এই প্রযুক্তির নাম দেওয়া হয়েছে এআই-ইসিজি রিস্ক ইস্টিমেটর।
গবেষকরা জানিয়েছেন, বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত বিভিন্ন প্রযুক্তির চিকিৎসা সেবায় এর আগে এআই-ইসিজি-এর যেসব সুবিধা পাওয়া যেত না, নতুন এই টুলে সেগুলো আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রযুক্তির কাজ সম্পর্কে গবেষকরা জানিয়েছেন, ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৩৯ জন রোগীর ১.১৬ মিলিয়ন ইসিজির রিপোর্টের তথ্যভাণ্ডারের মাধ্যমে এআই-ইসিজি রিস্ক ইস্টিমেটর টুলকে শেখানো হয়েছে।
তাদের দাবি, এই প্রযুক্তি অন্তত ৭৬ শতাংশ ক্ষেত্রে ভবিষ্য়তে হতে চলা হার্ট রিদম বা বিট সংক্রান্ত সমস্যা বুঝতে সক্ষম। অন্যদিকে ১০টির মধ্যে ৭টি ক্ষেত্রেই ধমনী সরু হয়ে রক্ত চলাচল সংক্রান্ত সমস্যা আগেভাগে বুঝতে পারছে। এই টুলকে ইতিমধ্যেই ‘এআই ডেথ ক্যালকুলেটর’ বলেও ডাকা হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউকে-এর ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের অধীনে ২টি হাসপাতালে ট্রায়াল চলবে এআই-ইসিজি রিস্ক ইস্টিমেটর টুলটি। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি থেকে ব্যবহার শুরু হবে এটি।
গবেষকরা মনে করছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে হৃদরোগের চিকিৎসায় এই টুলটি সার্বিকভাবে ব্যবহার করা হতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউকে-এর ইম্পেরিয়াল কলেজ হেলথকেয়ারের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ফু সিয়ং বলেছেন, হাসপাতালে যেসব রোগীর ইসিজি করা হবে, তাদের সকলকে এই মডেলের অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে। এতে ঝুঁকির পুরো পরিস্থিতি আমাদের সামনে উন্মোচিত হবে, এবং আমরা রোগ প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারব।
গবেষকরা এআই টুলের নিতবাচক দিক সম্পর্কেও মতামত দিয়েছেন। তারা বলেন, এআই সাধারণত সেই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্লেষণ করে, যার মাধ্যমে তাকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। যদি তথ্যভাণ্ডারে কোনো ত্রুটি থাকে, তাহলে ফলাফলেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। আরও তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই এআই টুল ব্যক্তি বিশেষের বয়স, জীবনযাপন এবং শারীরিক পরিস্থিতির মতো বিষয়গুলোর উপরও ভিত্তি করে বিশ্লেষণ করবে। এর ফলে আচমকা অসুস্থতা, চিকিৎসা পরিষেবার অবস্থা এবং অন্যান্য সম্পর্কিত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে এটি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়তে পারে।
সম্প্রতি নানা ক্ষেত্রেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এর ব্যবহার নানা ভাবেই হচ্ছে। সেই তালিকায় যুক্ত হল এই মডেলও। সূত্র: ডেইলি মেইল ও দ্যা গার্ডিয়ান
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...