মঙ্গলবার

ঢাকা, ৮ জুলাই ২০২৫

সর্বশেষ


খবর

ডিপফেক ভিডিওর ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, দুপুর ১২:৫৭

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

ফেসবুকে অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে সম্প্রতি একটি ডিপফেক ভিডিও ছড়ানো হয়। তিনি একটি জুয়ার অ্যাপ অনুমোদন করছেন, এমন মিথ্যা তথ্য দেখানো হয়েছে ভিডিওতে। অধ্যাপক ইউনূসকে সেখানে আর্থিক লাভের জন্য মানুষদের জুয়ায় আমন্ত্রণ জানাতে দেখা গেছে

জুয়াড়িরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নকল ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। ফেসবুকে সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস পেজ থেকে গতকাল সোমবার পোস্ট করা বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে জুয়ার বিজ্ঞাপন নতুন নয়, তবে সেগুলো এক উদ্বেগজনক মোড় নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিপুল জনপ্রিয়তার অন্যায় ব্যবহার করা হচ্ছে। জুয়াড়িরা তাদের সাইটে জনসাধারণকে আকৃষ্ট করতে সংবাদ প্রতিবেদন ও বিবৃতির অনুকরণে এআই দিয়ে তৈরি ডিপফেক ভিডিও তৈরি করছে।’

ডিপফেক ভিডিও মানে নকল ভিডিও। তৈরি করা হয় ডিপ লার্নিং নামের এক ধরনের এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে। এর সাহায্যে যে কারও মুখ দিয়ে যেকোনো কিছু বলিয়ে ভিডিও বানানো সম্ভব। সরকারপ্রধান বা খুব জনপ্রিয় কোনো ব্যক্তিত্বের বেলায় এই ভিডিওগুলো অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

ফেসবুকে অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে সম্প্রতি একটি ডিপফেক ভিডিও ছড়ানো হয়। তিনি একটি জুয়ার অ্যাপ অনুমোদন করছেন, এমন মিথ্যা তথ্য দেখানো হয়েছে ভিডিওতে। অধ্যাপক ইউনূসকে সেখানে আর্থিক লাভের জন্য মানুষদের জুয়ায় আমন্ত্রণ জানাতে দেখা গেছে।

ডিপফেক ভিডিওতে অধ্যাপক ইউনূসকে বলতে দেখা গেছে, ‘আমরা অল্পসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে আমাদের পণ্যটি পরীক্ষা করেছি। তাদের প্রত্যেকে প্রথম সপ্তাহে ৫ লাখ ৫৫ হাজারেরও বেশি টাকা আয় করেছে। প্রথম সপ্তাহে আপনি যদি অন্তত ৩৭ হাজার টাকা আয় না করেন তবে আমি আমার পকেট থেকে আপনার টাকা ফেরত দিতে রাজী আছি। এ পর্যন্ত কেউ কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জনে ব্যর্থ হয়নি।’

ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি বলে নিশ্চিত হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের তথ্য যাচাই দল। অনুসন্ধানে দেখা যায়, মূল ভিডিও ফুটেজ আল জাজিরার ‘টক টু আল জাজিরা’ অনুষ্ঠান থেকে নেওয়া হয়েছে। কাতারের দোহায় টিভি চ্যানেলটির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠানটি ধারন করা হয়, প্রচারিত হয় গত ২৭ এপ্রিল। সেই সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বেটিং বা সরকারি বিনিয়োগের অ্যাপ নিয়ে কোনো কথা বলেননি।

যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়, সেটি ২০২২ সালের ১৪ জুন খোলা হয়। লিথুয়ানিয়া থেকে একাধিক ব্যবহারকারী অ্যাকাউন্টটি পরিচালনা করেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। একটি জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা চালিয়ে অ্যাকাউন্টটি থেকে মোটে চারটি পোস্ট করা হয়েছে। 

উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা ডিপফেক ভিডিওটির মতো ড. ইউনূসকে নিয়ে আরও অনেক ভুয়া তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে আছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এর কোনোটিতে তাকে (ড. ইউনূস) বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সমাধান হিসেবে গেমিং অ্যাপের প্রচারণায় দেখানো হয়। অন্যগুলোতে ছাত্র আন্দোলন বা বন্যা কবলিতদের সাহায্যার্থে উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে বলা দাবি করা হয়।’

এআই দিয়ে তৈরি এ ধরনের ভুয়া ভিডিওর ব্যাপারে জনগণকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৫৭ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর