৪৯ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা আগে
১ দিন আগে
ছবি: সংগৃহীত
দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে বিটিআরসি সরকার, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার মধ্যে বৈষম্য ঘুচিয়ে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। আমরা এই তিন পক্ষের মধ্যে বৈষম্য চিহ্নিত করেছি। এখন ভোক্তা সেবাকে টেকসই করতে এখন প্রতিটি অংশকে সমান অংশীদারিত্বে গুরুত্ব দিচ্ছি। এজন্য নেটওয়ার্ক টপোলজিকে একেবারে সাধারণ করতে যাচ্ছি। আগামী মার্চের শেষে বা এপ্রিলে এটি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
ডিজিটাল সেবার নামে আমরা নানা মুখরোচক গল্প শুনেছি। এ জন্য বেশ কিছু ভুল নীতিমালাও হয়েছে। তারপরও আমরা জনগণের দোর গোড়ায় নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে পারিনি। সুশাসন ও স্বচ্ছতার অভাবে এটা সম্ভব হয়নি। যতই আমার ডিজিটাল রূপান্তর ও স্বচ্ছতার কথা বলি না কেন, এখনো স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতের মতো বিভিন্ন খাতে প্রযুক্তিভিত্তিক সমাধানের জন্য দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। ডিজিটাল রূপান্তর ও এমএসএমই উন্নয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীস্থ ব্র্যাক সেন্টারের মিলনায়তনে ‘ডিজিটাল রূপান্তর এবং এমএসএমই উন্নয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত দ্বিতীয় সেমিনারে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য, বিডিজবস সহ প্রতিষ্ঠাতা ও বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুরের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হেসেব বক্তব্য দেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী।
দেশে ইন্টারনেটের উৎপাদনশীল ব্যবহার হচ্ছে না উল্লেখ করে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী বলেন, ‘ব্যবহৃত সাড়ে ৬জিবির মধ্যে ৬০-৭০ শতাংশ ডেটা ইনফোটেইনমেন্ট সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মতো কাজে ব্যবহৃত হয়। এর কারণ মানুষের প্রয়োজনের নিরিখে নয় করপোরেট দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ডিজিটাল সেবার ভ্যালু তৈরি করা হচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ গ্রামের একজন ছেলে বসে বসে বিপিএল দেখছে। এটা ভালো। কিন্তু বিপিএল-এ বাজি ধরার চেয়ে এই মৌসুমে কোন বীজ, সার কোথায় পাওয়া যায়, অনলাইন ঋণ ইত্যাদি খোঁজার কথা। কিন্তু বড় কোম্পানিগুলো সেই কাজটা করছেন না।’
নব্বই দশকের দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের চিত্র তুলে ধরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে অন্তর্ভুক্তি এবং সংযুক্তি হাতে হাত ধরে এগিয়েছে। এসডিজি থেকে এমডিজিতে উত্তরণের এই সময়ে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ডেটা। পৃথিবীজুড়ে যখন শীতল যুদ্ধ চলছিলো তখন দেখা গলো, কেবল সরকারি উদ্যোগে উন্নয়ন সম্ভব নয়। বেসরকারি উদ্যোগকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তখনই রেগুলেটরের প্রয়োজন হলো। একসময় নেটওয়ার্কের মধ্যে অনেক গুলোর মধ্যে প্রচুর গেটওয়ে তৈরি হওয়ায় দায়বদ্ধতার প্রয়োজন হলো। তাই লাইসেন্স কমিয়ে আনলেও ওদের দিকটা ফেবার করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে গঠিত সরকারের অনুমোদিত টেলিকম নীতিমালায় বিটিআরসি’কে পরিচালিত হতে হলো। ফলে তখন অনেক অপ্রত্যাশিত লাইসেন্স দেওয়া হলো। এখন সেই ল্যাসেন্সগুলোই দাম কমানোর পথে বড় বাধা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। আমরা ভুলে যাচ্ছি, আজকের দিনে টেলিকম হচ্ছে একটি সুবিধা প্রদানকারী সহায়ক খাত। প্রতিটি খাতই এই খাত থেকে সুবিধাভোগ করছে। তাই, এই খাতে যারা ব্যবসা করবেন, তাদের কাছে ভোক্তা সংখ্যা বড় হওয়ার নয়। তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত-ভোক্তাদের বিনিয়োগ সহযোগী হওয়া।’
ইন্টারনেটের উৎপাদনশীল ব্যবহার বাড়ানো এবং আইএসপি-কে কানেক্টিভিটির পাশাপাশি ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী বলেন, ‘এই দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে বিটিআরসি সরকার, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার মধ্যে বৈষম্য ঘুচিয়ে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। আমরা এই তিন পক্ষের মধ্যে বৈষম্য চিহ্নিত করেছি। এখন ভোক্তা সেবাকে টেকসই করতে এখন প্রতিটি অংশকে সমান অংশীদারিত্বে গুরুত্ব দিচ্ছি। এজন্য নেটওয়ার্ক টপোলজিকে একেবারে সাধারণ করতে যাচ্ছি। আগামী মার্চের শেষে বা এপ্রিলে এটি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টাস্ক ফোর্সের সদস্য ও বিডিজবসের প্রতিষ্ঠাতা এ কে এম ফাহিম মাশরুর ও বিজ্ঞানী ও গবেষক মনজুর হোসেন।
সেমিনারে বিশিষ্ট আলোচক হিসেবে ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, শেয়ার ট্রিপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিস সাদিয়া হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই ও বিশেষ প্রোগ্রাম বিভাগের পরিচালক মি. নওশাদ মুছতাজা, ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সভাপতি মি. মহতাব উদ্দিন আহমেদ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পরিচালক মিস গায়েল এইচ মার্টিন (টিবিসি)।
এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন দেশের নীতিনির্ধারক, রাজনৈতিক নেতা, গবেষক ও শিক্ষক, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের সদস্য এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।
সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো সমতা, সমৃদ্ধি এবং ভালো শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপগুলো নিয়ে আলোচনা করা। এতে আলোচিত হয়েছে টাস্ক ফোর্সের সুপারিশগুলো এবং এসব সুপারিশের ভিত্তিতে কীভাবে একটি শক্তিশালী এবং কার্যকর কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা যায়, যা সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনাকে সমর্থন করবে এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটাবে।
সম্মেলনটির মাধ্যমে আশা করা হয়, বিভিন্ন পক্ষের মতামত ও অভিজ্ঞতার আলোকে একটি সম্মিলিত রোডম্যাপ তৈরি করা হবে, যা সমতা ও টেকসই উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...