৯ ঘন্টা আগে
১০ ঘন্টা আগে
ছবি: সংগৃহীত
বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অ্যাপটির প্রভাবে এআই খাতে শীর্ষস্থানীয় এনভিডিয়া কোম্পানির শেয়ার সোমবার ১৭% কমে যায়। এতে কোম্পানিটির বাজারমূল্য থেকে ৫৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে গেছে, যা একদিনে কোনো কোম্পানির জন্য ক্ষতির সর্বোচ্চ রেকর্ড।
অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে জনপ্রিয় চ্যাটজিপিটিকে পেছনে ফেলে শীর্ষ বিনামূল্যের অ্যাপ হিসেবে উঠে এসেছে চীনা এআই স্টার্টআপ ডিপসিক। ১০ জানুয়ারি চালুর পর থেকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অ্যাপটি মার্কিন ব্যবহারকারীদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এর প্রভাব পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তি শেয়ার বাজারের উপরে। মঙ্গলবার জাপানি প্রযুক্তি শেয়ারগুলো বড় ধরনের পতনের মুখে পড়ে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে সাশ্রয়ী মূল্যের চীনাভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলের উত্থান, যা বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। বিনিয়োগকারীরা এআই কোম্পানিগুলোর উচ্চ মূল্যায়ন এবং তাদের আধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অ্যাপটির প্রভাবে এআই খাতে শীর্ষস্থানীয় এনভিডিয়া কোম্পানির শেয়ার সোমবার ১৭% কমে যায়। এতে কোম্পানিটির বাজারমূল্য থেকে ৫৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে গেছে, যা একদিনে কোনো কোম্পানির জন্য ক্ষতির সর্বোচ্চ রেকর্ড।
গত সপ্তাহে চীনাভিত্তিক স্টার্টআপ ডিপসিক একটি ফ্রি এআই সাহায্যকারী উন্মোচন করে, যা তুলনামূলক কম ডেটা ব্যবহার করে এবং কম খরচে প্রয়োজনীয় কাজ কাজ করা যায়। এটি বিশ্বজুড়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তবে, অনেকেই এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
ওপেন এআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান এটিকে চমৎকার মডেল বলে অভিহিত করেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, ‘আমরা অবশ্যই আরও ভালো মডেল তৈরি করব। তবে প্রযুক্তির বাজারে নতুন প্রতিযোগী দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি।’
ডিপসিকের উত্থান বিনিয়োগকারীদের বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি শেয়ার বিক্রি করতে প্ররোচিত করে, যার প্রভাব টোকিও, আমস্টারডাম এবং সিলিকন ভ্যালি পর্যন্ত দেখা যায়।
লুনার নিউ ইয়ার উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের বাজার কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রয়েছে। চীনের বাজারও ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তাই এখন জাপানি কোম্পানিগুলো আলোচনায় কেন্দ্রবিন্দুতে।
মঙ্গলবার, এনভিডিয়ার সরবরাহকারী চিপ-পরীক্ষা যন্ত্র নির্মাতা এডভানটেস্ট ১০% দর হারায়, আগের দিনের ৯% পতনের পর। টকিও ইলেকট্রন ও সফটব্যাংক গ্রুপের শেয়ারও ৫% কমে যায়।
আগস্ট মাসে জাপানের নিক্কেই সূচক নিয়ে ঘটে যাওয়া বৈশ্বিক বাজার বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে নিউবার্জার বারম্যানের পোর্টফোলিও ম্যানেজার কেই ওকামুরা বলেন, ‘এটি এক ধরনের প্রথমে বিক্রি, পরে প্রশ্ন করা পদক্ষেপ, যা আমরা অতীতে জাপানে দেখেছি।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে, ব্রডকমের শেয়ার ১৭.৪% কমে গেছে, মাইক্রোসফটের ২.১% নিচে নেমে গেছে এবং গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি আলফাবেটের শেয়ারও ৪.২% কমে গেছে। ফিলাডেলফিয়া সেমিকন্ডাক্টর সূচক ৯.২% কমে, যা ২০২০ সালের মার্চ-এর পর সবচেয়ে বড় ধরনের ধস।
বিক্রির ধস দেখিয়েছে যে বিনিয়োগকারীরা খুব বেশি পরিমাণে শেয়ার কিনে ফেলেছেন এবং ইউএস প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো AI উন্নয়নে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে, পাশাপাশি এই কোম্পানিগুলোর মূল্য খুব বেশি হয়ে গেছে।
বিক্রির ধস দেখিয়েছে যে বিনিয়োগকারীরা তারা অনেক বেশি শেয়ার কিনে ফেলেছেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এআই প্রযুক্তি উন্নয়নে বিশাল পরিমাণ অর্থ ঢালছে, যেটি এই কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত মূল্যায়নের কারণ।
‘সোমবারের প্রযুক্তি বিক্রির মূল কারণ হলো, এই এইআই এবং প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মূল্য এত বেশি যে তাতে কোনো ভুল করার সুযোগ নেই।,’- বললেন দ্য বাহসেন গ্রুপের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা ডেভিড বাহনসেন।
‘এই প্রযুক্তি শেয়ারের বেশি অংশ পোর্টফোলিওতে এবং বাজার সূচকে এগুলোর অত্যধিক উপস্থিতি একটি বড় ঝুঁকি ছিল, যা যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।’
এআই-এর প্রতি বেশি আগ্রহের ফলে প্রচুর পরিমাণে টাকা শেয়ার বাজারে ঢুকেছে, যার ফলে শেয়ার মূল্য বেড়ে গেছে এবং বাজার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। নভেম্বর ২০২২ থেকে চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে এআই বিপ্লব শুরু হওয়ার পর, ‘ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন’ কোম্পানিগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে। সূত্র: রয়টার্স।
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...