বৃহস্পতিবার

ঢাকা, ১০ অক্টোবর ২০২৪

সর্বশেষ


খবর

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন রাখা হবে না: উপদেষ্টা নাহিদ

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, দুপুর ১০:৩৯

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন রাখা হবে না। জাতীয় স্বার্থরক্ষা করে যেকোনো বিনিয়োগকে সরকার সাধুবাদ জানাবে। পাশাপাশি দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর ও অনমনীয় থাকবে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিপ্রেক্ষিতে আলোচিত ‘সাইবার সিকিউরিটি আইন’ নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের কাছে জানতে চেয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ। একইসঙ্গে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মেটা, গুগল, মাইক্রোসফট, ওরাকলের বিনিয়োগ বিষয়েও অন্তবর্তী সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও আলাপ হয়েছে।

জবাবে উপদেষ্টা নাহিদ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন রাখা হবে না। জাতীয় স্বার্থরক্ষা করে যেকোনো বিনিয়োগকে সরকার সাধুবাদ জানাবে। পাশাপাশি দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর ও অনমনীয় থাকবে।”

মঙ্গলবার সচিবালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাতে এসব বিষয় উঠে আসে।

বৈঠকে দেশে সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্ব আরও বাড়াতে অন্তর্বর্তী সরকার ওয়েজ বোর্ড সংস্কারের চিন্তাভাবনা করছে জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‌‌‘‘ওয়েজ বোর্ড নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে অসন্তোষ আছে। বেতন কাঠামো কম হ‌ওয়ায় তরুণরা সাংবাদিকতার মতো পেশায় আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাই ওয়েজ বোর্ড সংস্কারের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।’’

এসময় দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক কর্মকর্তা স্টিফেন ইবেলি এবং কমার্সিয়াল কাউন্সেলর জন ফে তার সঙ্গে ছিলেন। এছাড়াও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেন। পাশাপাশি দূতাবাসের পলিটিক্যাল-ইকোনমিক কাউন্সেলর এরিখ জিলান, মার্কিন দূতাবাসের অর্থনৈতিক কর্মকর্তা জেমস গার্ডিনার, প্রটোকল সুপারভাইজার নিশাত তাসনিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা শুরুতেই হেলেন লাফেভ উপদেষ্টাকে নতুন দায়িত্বগ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে ছাত্রদের প্রতিনিধি হয়ে সরকারে এসে দৃষ্টিভঙ্গির কী পরিবর্তন হয়েছে, তা জানতে চান। জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘ছাত্রদের প্রতিনিধি হয়ে সরকারের কাজে এসেছি, তাই দৃষ্টিভঙ্গি একই আছে। শুধু কাজের পদ্ধতি পরিবর্তন হয়েছে। আমরা দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করছি।’’

উপদেষ্টার অধীন দুই মন্ত্রণালয় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দলের আগ্রহ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘‘মন্ত্রণালয় দুটির প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কথা ভাবছি। সে অনুযায়ী প্রস্তাবনা তৈরি করে কাজ করা হচ্ছে।’’

আলাপকালে হেলেন লাফেভ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা; বিশেষ করে সাইবার সিকিউরিটি আইন বিষয় জানতে চান। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমরা অবশ্যই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই। বিগত বছরগুলোতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে নিচের দিকে ছিল। বিগত দিনে বাংলাদেশে সাংবাদিকরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। আমরা দেখেছি সাংবাদিক সাগর ও রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রহসন হয়েছে। বিগত সরকার বেশ কিছু আইন দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন। আমরা এ আইন নিয়ে কাজ করছি। মূল কথা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন আমরা রাখবো না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের মিডিয়া হাউজের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকার কীভাবে দেখছে, সে বিষয়ে জানতে চান স্টিফেন ইবেলি। উত্তরে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। সাংবাদিকরা যদি এ বিষয়ে সংস্কারের জন্য এগিয়ে আসেন, তাহলে আমরা এ সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবো। এক্ষেত্রে পিআইবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ এবং সিটিজেন জার্নালিস্টদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে বাংলদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করতে পারে।

বৈঠকে অংশ নেওয়ার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কমার্সিয়াল কাউন্সেলর জন ফে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির মেটা, গুগল, মাইক্রোসফট, ওরাকলের বিনিয়োগ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘জাতীয় স্বার্থরক্ষা করে যেকোনো বিনিয়োগকে আমরা স্বাগত জানাই। পাশাপাশি ভারতের পরিবর্তে বাংলাদেশে এ কোম্পানিগুলোর ডাটা সেন্টার স্থাপনের অনুরোধ রইলো।’’

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৬৮ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর