১৯ ঘন্টা আগে
২০ ঘন্টা আগে
২৩ ঘন্টা আগে
১ দিন আগে
ছবি: বাংলাদেশ এআই সামিটের অতিথিদের সঙ্গে এআই হ্যাকাথনের বিজয়ীরা। সংগৃহীত
বাংলাদেশ এখন শুধু এআই গ্রহণ করতে চায় না, নেতৃত্ব দিতেও প্রস্তুত
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক (এআই) একটি সমন্বিত জাতীয় কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়তা করতে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের আয়োজনে ৮ মে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ এআই সামিট।
দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ, প্রযুক্তি ও এআই বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও উদ্ভাবকরা সম্মেলনে অংশ নেন। বিশেষজ্ঞ আলোচকেরা এআই প্রযুক্তির ব্যবহার, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতা, উদ্ভাবন এবং এআই প্রযুক্তির জোরালো সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন খাতের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা এবং বাংলাদেশে এআই ট্যালেন্ট তৈরির একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তোলার সম্ভাব্য সুযোগ নিয়েও এই সামিটে আলোচনা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আকিজ রিসোর্স ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির পৃষ্ঠপোষকতা এবং ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনটি বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের একটি ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ।
সম্মেলনে এআই হ্যাকাথনের ছয় বিজয়ী দলকেও পুরস্কৃত করা হয়।
ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের ডিন মোহাম্মদ মুজিবুল হক সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এরপর উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম এবং বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আর শুধু প্রযুক্তির বিষয় নয়, এটি আমাদের জীবনের প্রতিটি খাতকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। শিল্পকারখানা থেকে শুরু করে কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শিক্ষা, প্রশাসন থেকে দৈনন্দিন জীবন—সবখানেই এআই এনে দিচ্ছে দ্রুত সমাধান, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রগতির অশেষ সম্ভাবনা।’
প্রধান অতিথি হিসেবে আয়োজনটির উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি এক বৈশ্বিক পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণে, যেখানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কি কেবল প্রযুক্তির অনুসারী হব, নাকি এর পথপ্রদর্শক? এই সামিট আমাদের সেই ভাবনার দিগন্ত খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন শুধু এআই গ্রহণ করতে চায় না, নেতৃত্ব দিতেও প্রস্তুত।’
দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন—এই তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ বৈশ্বিক এআই অগ্রযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর হতে পারে বলেও জানান শীষ হায়দার চৌধুরী।
সম্মেলনটি কেবল জ্ঞান বিনিময় নয়, বরং নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে বলে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই আলোচনা আমাদের বুঝতে শিখিয়েছে, এআই একদিকে যেমন বিশাল সুযোগ এনে দিচ্ছে, অন্যদিকে তেমন কিছু গভীর চ্যালেঞ্জও সামনে আনছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি হচ্ছে, এই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা নির্ভর করছে আমাদের আজকের সিদ্ধান্তের ওপর।’
চারটি কিনোট সেশন, দুটি প্যানেল আলোচনা, পাঁচটি ইনসাইট সেশন, দুটি কেস স্টাডি ও একটি ফায়ারসাইড চ্যাট নিয়ে বাংলাদেশ এআই সামিট সাজানো হয়। পাশাপাশি পাঁচটি ব্রেকআউট সেশনে বিশেষজ্ঞরা শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, ফিনটেক ও শিল্পখাতে এআই অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক আলোচনা করেন।
আয়োজনটির কিনোট আলোচনায় উঠে এসেছে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গঠনে এআইয়ের ভূমিকা, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এআইয়ের অগ্রগতি এবং বাংলাদেশের সম্ভাবনা, পরিবর্তিত এআই পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর করণীয় এবং কৃষি, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের মতো খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্ভাবনের শক্তিকে কাজে লাগানোর মতো প্রাসঙ্গিক বিষয়াবলী।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার সমাপনী অধিবেশনে সামাজিক উন্নয়ন ও বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। পুরো সম্মেলনে আরও অনেক বিশেষজ্ঞ বক্তা নিজ নিজ বিষয়ে তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা তুলে ধরেন।
এআই হ্যাকাথনের ছয় বিজয়ী
সামিটে বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের আরেকটি উদ্যোগ এআই হ্যাকাথনের বিজয়ীদের সম্মাননাও দেওয়া হয়। শহর ব্যবস্থাপনা, শিল্পোৎপাদন, শিক্ষা, কৃষি, ফিনটেক এবং স্বাস্থ্যসেবা–এই ছয়টি খাতে ছয়টি উদ্ভাবনী এআই সমাধানকে সম্মাননাটি প্রদান করা হয়েছে। এই সময় ছয়টি খাতের প্রতিটির বিজয়ী দলকে ১ লাখ টাকার সম্মাননা প্রদান করা হয়।
হ্যাকাথনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মেশিন মাইন্ডসেট’ শিল্পোৎপাদন বিভাগে বিজয়ী হয়েছে। মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) থেকে ‘কিউআরএআরজি’ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে, ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি থেকে ‘রানটাইম টেররস’ ফিনটেক বিভাগে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘কোড ফার্মারস’ কৃষি বিভাগে, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে ‘টিম গ্লাইডার্স’ শহর ব্যবস্থাপনা বিভাগে এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে ‘বুরাক’ শিক্ষা বিভাগে বিজয়ী হয়েছে।
বাংলাদেশে নগর এবং খাতভিত্তিক সমস্যাগুলোর সমাধানে এআই-চালিত প্রযুক্তি তৈরি করার উদ্দেশ্যে গত ১০ মার্চএআই হ্যাকাথনের যাত্রা শুরু হয়। এই প্রতিযোগিতায় ৭০টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৭৭টি দল অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে থেকে ৩১টি দলকে গত ১৬ এপ্রিল সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখা হয়। এই দলগুলো ১৭ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত তাদের প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ করে। পরবর্তীতে ৬ ও ৭ মে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত দুই দিনের বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীরা ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টদের থেকে মেন্টরশিপ গ্রহণ করে এবং চূড়ান্ত প্রদর্শনীতে তাদের সমাধান উপস্থাপন করে।
আয়োজনটির স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট, রিভ চ্যাট, ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি বাংলাদেশ পিএলসি, মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ, ন্যামকন, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভারটাইজিং অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ। অফিশিয়াল ক্যারিয়ার পার্টনার টার্কিস এয়ারলাইনস। রিফ্রেশমেন্ট পার্টনার প্রাণ এবং পিআর পার্টনার ব্যাকপেজ পিআর।
মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আইএসপিএবি'র সাবেক...