সোমবার

ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সর্বশেষ


খবর

২৪ ঘণ্টা বায়ুর মানের ডাটা দেবে ৮টি জাপানি প্রযুক্তির যন্ত্র

প্রকাশ: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, দুপুর ৩:০০

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

‘দ্য প্রজেক্ট ফর ইম্প্রুভমেন্ট অব ইক্যুইপমেন্ট ফর এয়ার পলুশন মনিটরিং’ প্রকল্পের আওতায় এই স্টেশনগুলিতে স্থাপিত হবে মোট ৮টি জাপানি প্রযুক্তির যন্ত্র এক একটি যন্ত্র কিনতে সরকারের খরচ হবে সাড়ে ৭ কোটি টাকার উপরে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা অনুদান দেবে জাপান।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরীর দূষণ পরিমাপে স্থাপন করা হচ্ছে এয়ার কোয়ালিটি স্টেশন। রাজধানীর উত্তরার হাউজবিল্ডিং, বনানী, রামপুরা, যাত্রবাড়ী ও ধানমন্ডির সড়কের পাশে এই স্টেশন স্থাপন করা হবে।

চট্টগ্রামের সিডিএ (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং বিএসআই-এর (বাংলাদেশ সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন) জমিতে দুটি স্টেশন স্থাপন করা হবে। একটি স্টেশন থাকবে ভ্রাম্যমাণ। যানবাহন যে সব এলাকায় বেশি সেই সব এলাকায় এটা টহল দেবে। এসব যন্ত্রপাতি ২৪ ঘণ্টা বায়ুর মান দেবে এবং পরিবহন কী পরিমাণে দুই নগরীতে দূষণ বাড়াচ্ছে তার তথ্য দেবে।

‘দ্য প্রজেক্ট ফর ইম্প্রুভমেন্ট অব ইক্যুইপমেন্ট ফর এয়ার পলুশন মনিটরিং’ প্রকল্পের আওতায় এই স্টেশনগুলিতে স্থাপিত হবে মোট ৮টি জাপানি প্রযুক্তির যন্ত্র।

এক একটি যন্ত্র কিনতে সরকারের খরচ হবে সাড়ে ৭ কোটি টাকার উপরে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা অনুদান দেবে জাপান।

এ লক্ষ্যে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের মধ্যে ‘বিনিময় নোট’ ও ‘অনুদান চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী জাপানি অনুদান সহায়তা স্বাক্ষরিত নোট বিনিময় করেন। জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইড এবং মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী একটি প্রাসঙ্গিক অনুদান চুক্তিতে সই করেন।

জাপান সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় উপমন্ত্রী ইকুইনা আকিকো চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উপমন্ত্রী ইকুইনা আকিকো বলেন, কৌশলগত অংশীদারিত্বের আওতায় জাপান এ অঞ্চল, আন্তর্জাতিক শান্তি, স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও উন্নত করার জন্য বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য তার সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মোহাম্মাদ আব্দুল মোতালিব জানিয়েছে, স্থাপন করার পর যন্ত্রগুলো এয়ার কোয়ালিটির ২৪ ঘণ্টা ডাটা দেবে। রোড সাইডের দূষণ কাউন্ট করা হবে। কী পরিমাণে পরিবহন দূষণ করছে তা আইডেন্টিফাই করা হবে। এর পরে সরকার পলিসি ঠিক করবে কী করা যায়।

জানাগেছে, মার্চ ২০২৫ থেকে জুন ২০২৮ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তর। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো ঢাকা ও চট্টগ্রামে যানবাহন থেকে নির্গত দূষিত বায়ুর প্রভাব বিশ্লেষণের জন্য কন্টিনিউয়াস এয়ার মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা। স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে যানবাহনের নির্গমন থেকে উদ্ভূত বায়ু দূষণকারী উপাদান পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করা যাবে।

পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, আধুনিক যন্ত্র ২৪ ঘণ্টা ডাটা সরবরাহ করবে। কোন পরিবহন কী পরিমাণে দূষণ করছে দূষণ রোধে সরকারের করণীয় বিষয়ও নির্ধারণ হবে এর মাধ্যমে। দূষণরোধে পরিবহন খাত পরিবর্তন ও আধুনিকতায় করণীয় বিষয়ে অবগত হতে পারবে সরকার। এর পরে পরিবহন খাতকে ঢেলে সাজাতে পারবে সরকার। পরিবহন খাতে বড় আকারে বিনিয়োগও করতে চায় জাপান। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাপানি প্রযুক্তি স্থাপনের পর এগুলো ১০ বছর সেবা দেবে।

প্রকল্পের প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ১০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪১ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং জাপানি অনুদান ৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। মার্চ ২০২৫ হতে জুন ২০২৮ পর্যন্ত। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রাস্তার পাশের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করা এবং সড়ক ও পরিবহন সম্পর্কিত দূষণে অবদান মূল্যায়ন করা।

নতুন একটি প্রকল্পের আওতায় পরিবহন থেকে বায়ুদূষণের মাত্রা নিরুপণের জন্য দুটি শহরের রোডসাইড মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা হবে এবং বায়ুদূষণ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যন্ত্রপাতিগুলো জাপান থেকে আমদানি করা হবে। পরিবহন ছাড়াও অন্যান্য যেসব কারণে বায়ুদূষণ হয় তা নিরুপণ করা এবং বায়ুদূষণের ফলে স্বাস্থ্যের ওপর যে প্রতিকূল প্রভাব পড়ে তা নিরুপণ করাসহ বায়ুদূষণ সংক্রান্ত অন্যান্য চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করে তা সমাধানের কৌশল এবং কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। প্রকল্পটির ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভায় অনুমোদন হয়েছে। সামনের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে যাচ্ছে প্রকল্পটি।

প্রসঙ্গত, দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে জাপান বাংলাদেশের একক বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে এ যাবৎ জাপান সরকার ৩২.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে। বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। নমনীয় ঋণ ছাড়াও জাপান বিভিন্ন প্রকল্পে অনুদান ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে, যার মধ্যে মানবসম্পদ উন্নয়ন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং পরিবেশ সুরক্ষা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৪১ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর