৮ ঘন্টা আগে
১০ ঘন্টা আগে
ছবি: সংগৃহীত
২০২৪ সালে ৯৬৬টি স্টার্টআপ বন্ধ হয়েছে। ২০২৩ সালে বন্ধ হলো ৭৬৯টি, যা ২৫.৬% বেশি। এই সংখ্যা শুধু যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সফটওয়্যার কোম্পানি কার্টা গ্রাহকদের জন্য, যারা কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেবা নেওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তবে, কার্টা-এর বাইরে আরও কিছু স্টার্টআপ কোম্পানি বন্ধ হয়েছে, যা হয়তো হিসাব করা হয়নি।
আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে বেশি স্টার্টআপ বন্ধ হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র। এটা খুব একটা আশ্চর্যের নয়, কারণ ২০২০ এবং ২০২১ সালে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ পেয়েছে। অতিরিক্ত বিনিয়োগের ফলেই এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ২০২৫ সাল আবারও স্টার্টআপগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জের বছর হতে পারে। একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে এই তথ্য জানিয়েছে টেকক্রাঞ্চ।
‘২০২৪ সালে ৯৬৬টি স্টার্টআপ বন্ধ হয়েছে। ২০২৩ সালে বন্ধ হলো ৭৬৯টি, যা ২৫.৬% বেশি। এই সংখ্যা শুধু যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সফটওয়্যার কোম্পানি কার্টা গ্রাহকদের জন্য, যারা কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেবা নেওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তবে, কার্টা-এর বাইরে আরও কিছু স্টার্টআপ কোম্পানি বন্ধ হয়েছে, যা হয়তো হিসাব করা হয়নি’, -বলেছেন কার্টা-এর ইনসাইটস প্রধান পিটার ওয়াকার।
‘২০২৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরে স্টার্টআপ বন্ধ হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। তবে, ২০২০ এবং ২০২১ সালে বেশি সংখ্যক কোম্পানি বড় পরিমাণ বিনিয়োগ পেয়েছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি)-এর প্রক্রিয়ার কারণে স্টার্টআপ বন্ধ হওয়ার সংখ্যা বাড়ানোটা স্বাভাবিক,’- যোগ করেন তিনি।
ওয়াকার স্বীকার করেছেন, কতগুলো স্টার্টআপ বন্ধ হয়েছে বা আরও হবে, তা সঠিকভাবে বলা কঠিন।
তিনি টেকক্রাঞ্চকে বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা অনেক কিছু মিস করেছি। অনেক কোম্পানি কার্টা ত্যাগ করে, কিন্তু কেন তারা চলে গেছে, তা আমাদের জানায় না।’
স্টার্টআপগুলির জন্য তহবিল সংগ্রহ করা প্লাটফর্ম অ্যাঞ্জেলিস্ট জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ৩৬৪টি স্টার্টআপ বন্ধ হয়েছে, যা ২০২৩ সালের ২৩৩টির তুলনায় ৫৬.২% বেশি।
এদিকে অ্যাঞ্জেলিস্ট-এর সিইও আভলক কোহলি বলেছেন, ‘স্টার্টআপ বন্ধ হওয়ার সংখ্যা এখনও খুব কম, বিশেষ করে গত দুই বছরে যে পরিমাণ কোম্পানি বিনিয়োগ পেয়েছে, সেগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে চাকরি হারানো কর্মীদের তথ্য সংগ্রহ করা প্ল্যাটফর্ম লেওফস কিছু বিপরীত তথ্য পেয়েছে। প্ল্যাটফর্মটির তথ্য মতে, ২০২৪ সালে ৮৫টি টেক কোম্পানি বন্ধ হয়েছে। যেখানে ২০২৩ সালে ছিল ১০৯টি এবং ২০২২ সালে ৫৮টি। তবে, রজার লি জানিয়েছেন, এই তথ্য শুধুমাত্র প্রকাশিত বন্ধ হওয়ার ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করে। তাই এটি আসল সংখ্যার তুলনায় কম হতে পারে। ২০২৪ সালে বন্ধ হওয়া ৮১% কোম্পানি ছিল স্টার্টআপ, আর বাকি কোম্পানিগুলো ছিল পাবলিক কোম্পানি বা পূর্বে অধিগ্রহণ করা কোম্পানি, যেগুলো পরে তাদের প্যারেন্ট কোম্পানির দ্বারা বন্ধ হয়ে গেছে।
‘২০২০ ও ২০২১ সালে অনেক কোম্পানি উচ্চ মূল্যায়নে তহবিল পেয়েছিল, কিন্তু সেভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়নি। তাই তিন বছর পর অনেক কোম্পানি তাদের কার্যক্রম চালানোর জন্য নতুন তহবিল সংগ্রহ করতে পারছে না। খুব বেশি উচ্চ মূল্যায়নে বিনিয়োগ নেওয়া কোম্পানির জন্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা নতুন তহবিল দিতে চায় না, যদি না ব্যবসা অনেক ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়।’
ওয়াকার বলেছেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, ২০২১ সালে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা ঠিকভাবে সেরা কোম্পানিগুলো চিহ্নিত করতে পারেনি। আসলে, সেই বছর সবকিছু এত দ্রুত ঘটছিল যে, সফল কোম্পানির হার হয়তো আরও খারাপ ছিল। আর যদি ভালো কোম্পানির সাফল্যের হার একই থাকে এবং আমরা আরও অনেক স্টার্টআপে বিনিয়োগ করি, তাহলে কিছু বছরের মধ্যে অনেক বেশি স্টার্টআপ বন্ধ হবে। এবং আমরা এখন ২০২৪ সালে ঠিক সেই পরিস্থিতিতেই আছি।’
স্টার্টআপ কোম্পানি বন্ধ হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ওয়াকার বলেন, ‘স্টার্টআপ কোম্পানির টাকা শেষ হয়ে যাওয়া সাধারণত বন্ধের প্রধান কারণ। কিন্তু আসল কারণগুলো হয়তো পণ্য এবং বাজারের সঙ্গতি না থাকা, লাভজনক হতে না পারা এবং অতিরিক্ত মূল্যায়ন, যা নতুন বিনিয়োগ সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি করে।’
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ওয়াকার মনে করেন, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে আরও অনেক স্টার্টআপ বন্ধ হতে পারে। তবে বছরের শেষের দিকে তা ধীরে ধীরে কমবে।
এই ভবিষ্যদ্বাণী মূলত তহবিল পাওয়া শুরু থেকে পরবর্তী সময়ের হিসাব অনুযায়ী, যা তার মতে ২০২২ সালের প্রথম তিন মাসে হয়েছিল। তাই ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে বেশিরভাগ কোম্পানি হয় নতুন পথ খুঁজে পাবে, নয়তো কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে।
অ্যাঞ্জেলিস্ট-এর কোহলি এ বিষয়ে একমত। তিনি বলেন, ‘তাদের বন্ধ হওয়া স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর সবাই হারিয়ে যায়নি। তারা এখনও কার্যক্রম চালু করা নিয়ে চেষ্টায় আছে।’
কোহলি বলেন, ‘এ বছর শুরুতেই আমরা দেখতে পেয়েছি, ওয়াশিংটনভিত্তিক ডেলিভারি স্টার্টআপ প্যাডিয়ন তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এই কোম্পানিটি প্যান্ডেমিকের সময় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং গত পাঁচ বছরে প্রায় ১২৫ মিলিয়ন ডলার তহবিল পেয়েছিল। আর ডিসেম্বরে, প্রপটেক স্টার্টআপ ইজিনক হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। ইজিনক যা নিজেকে প্রথম টেক-ভিত্তিক আবাসিক সেল-লিজব্যাক সেবা প্রদানকারী হিসেবে পরিচিত করেছিল। এটি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ৪৫৫ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছিল কোম্পানিটি।’ সূত্র: টেকক্রাঞ্চ
উজ্জ্বল এ গমেজ
অধ্যাপক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন। গবেষক ও ডিজিটাল হেলথ সিস্টেমের একজন বিশেষজ্ঞ। উদ্ভাবন...